সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ জুলাই, ২০১৯ ১১:৫৮

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে থাকতে চান মাশরাফিরা

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই টান টান উত্তেজনা। মাঠের খেলায় যতটা না, তার চেয়ে বেশি উত্তাপ থাকে ভক্ত-সমর্থকদের মাঝে। এই উত্তাপ অনেক সময় প্রভাব ফেলে ড্রেসিংরুমেও! যা খেলোয়াড়দের মাঝেও চাপও তৈরি করে। মাশরাফিরা অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই উত্তাপ থেকে দূরে থাকতে চান।

ক্রিকেট বিশ্বে একটা সময় ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই ছিল বাড়তি উত্তেজনা। পাকিস্তানের সেই জায়গায় আস্তে আস্তে দখলে নিচ্ছে বাংলাদেশ। এখন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচ মানে একই রকম উন্মাদনা, ছড়ায় রোমাঞ্চ।

দুই দলের লড়াই এতোই উত্তাপ ছড়াচ্ছে, যে তার বড় উদাহরণ ২০১৬ সালে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৮ সালে নিদাহাস কাপের ফাইনাল ম্যাচ এবং ২০১৮ সালে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের ফাইনাল। তিনটি ম্যাচের ফলাফলই হয়েছে শেষ বলে।

তবে বাংলাদেশ ও ভারত ম্যাচ নিয়ে উন্মাদনা শুরু হয়েছিল আরও আগে। ২০০৭ সালে পোর্ট অব স্পেনে শচীনের শততম ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল টাইগাররা। এরপর ২০১৫ বিশ্বকাপে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত কোয়ার্টার ফাইনালে রোহিত শর্মার বিতর্কিত নো বলের দিনে হেরেছে বাংলাদেশ, যা বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের উত্তেজনাকে আরও উস্কে দিয়েছে।

বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে তিন ম্যাচ সিরিজে ২-১ এ জিতে মেলবোর্নের প্রতিশোধ খুব ভালো করেই নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই উত্তাপ নিয়েই ২০১৮ সালে এশিয়া কাপ ও নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। কিন্তু বাংলাদেশকে হতাশ করে শেষ হাসি হাসে ভারতই।

মঙ্গলবার সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে ভারতের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই মাশরাফিদের সামনে। সামাজিকমাধ্যম থেকে শুরু করে সর্বত্রই এই ম্যাচ নিয়ে আলোচনা। মাঠের লড়াইয়ের আগে শুরু হয়ে গেছে কথার লড়াই। ম্যাচের যে কোন ঘটনাই হয়ে যাচ্ছে বড় ইস্যু। অবশ্য মাশরাফি মুর্তজা এসব উত্তেজনা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চান।

মাথা ঠাণ্ডা রেখে চাপ সামাল দিতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘হয়তোবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক কথা চলে, চলবে। তাই ওসব থেকে দূরে থাকাই ভালো। আমরা যদি ভালো খেলি, জিতি সেটাই হবে বড় অর্জন। সেদিকেই ফোকাস করা উচিত। মাথা যত ঠাণ্ডা থাকা যায় সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি মনে করেন এভাবেই তৈরি হয় চাপ। তাই এসব থেকে দূরে থাকতে করণীয় হিসেবে মাশরাফি মনে করেন, ‘চাপটা এভাবে তৈরি হয়, প্লেয়ারদের ধরে রাখাও কঠিন হয়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ হল নার্ভ ধরে রাখা এবং প্রতিনিয়ত মাঠে গিয়ে আমরা যে জিনিসগুলো করছি সেগুলো ঠিকমত করা। ম্যাচের শুরুতে স্নায়ু উত্তেজনা কাজ করে। আস্তে আস্তে ঠিক হয়। তাই গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মাঠে নেমে স্বাভাবিক থাকা।'

এজবাস্টনে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিম বেশ ভালো অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিলেন দলকে। দুই উইকেটে ১৫৪ রান করেও হুট করে ধস নেমেছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে। তিনশো ছাড়ানো যেত যে ইনিংস, সেটা গিয়ে থামে ২৬৪ রানে। তাহলে কি ভারতের বিপক্ষে চাপেই ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ?

এমন প্রশ্নে মাশরাফির উত্তর, ‘আমার মনে হয় না এটা আমাদের স্কিলের সমস্যা। অবশ্যই ক্রিকেট মানসিক খেলা। ভক্তরা তাদের মতো করে ভাবতে পারে। এমনটা নয় যে তাদের ভাবনা মাথায় নিয়ে আমরা খেলতে নামি। যখন খেলতে নামি তখন সব চাপ মোকাবেলা করতে হবে এই মানসিকতা নিয়েই খেলতে নামি।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘অবশ্য মাঠে চাপ থাকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে বাংলাদেশি সমর্থকরা সাপোর্ট করছে। অবশ্যই তারা চায় জয়। এটাই স্বাভাবিক। ভারতের দর্শকরা তাদের দলকে সাপোর্ট করে জয়ই চাইবে। এটাও স্বাভাবিক বিষয়।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত