টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কি ভারত সফরে যাচ্ছেন? না কোন কারণে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন নাকি কোন পরিস্থিতি কি তাকে দূরে সরিয়ে রাখছে, হুট করে এমন সব প্রশ্নই এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে। বিসিবির প্রধান নাজমুল হাসান নিজেই সাকিবের যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় মাঠে এসেও বোর্ড প্রধান সেই অনিশ্চয়তা দূর করতে পারেননি। উলটো তা আরও জট পাকিয়েছে বলেই খবর।

সাকিব থাকছেন কিনা সেই নিশ্চয়তা না মেলায় তৈরি করে রাখা টেস্ট দল শেষ মুহূর্তে ঘোষণা করতে পারেননি নির্বাচকরা। ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খান গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, পরিবর্তিত টি-টোয়েন্টি দল দেওয়া হবে মঙ্গলবার দুপুরে। কিন্তু টেস্ট দল ঘোষণা পিছিয়ে যাচ্ছে আরও,  ‘টি-টোয়েন্টি দল (পরিবর্তিত) আগামীকাল ১২টা একটার দিকে আমরা দিয়ে দেব। টেস্টটা কিছুদিন সময় লাগবে আমাদের। দুই তিনদিন সময় লাগতে পারে। আমাদের কিছু কথাবার্তা বাকি আছে। সেটা হয়ে গেলে কাল দিয়ে দেব।’

অথচ আকরামের কথা বলার ঘন্টা খানেক আগেও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন জানিয়েছিলেন রাতেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দিয়ে দেওয়া হবে টেস্ট দল।

আগে ঘোষিত টি-টোয়েন্টি দল থেকে চোটের কারণে বাদ পড়েছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, পারিবারিক কারণে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তামিম ইকবাল। এই দুজনের বদলি এখনো নেওয়া হয়নি। এরমধ্যে সাকিবের যাওয়া, না যাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

জানা গেছে, মূলত সাকিবকে নিয়ে অনিশ্চয়তাই কোন সুরাহা না হওয়ায় পিছিয়ে গেছে দল ঘোষণা। এতে সরে গেছে ভারত সফরের প্রস্তুতির ফোকাসও। আকরাম জানিয়েছেন সাকিব যাচ্ছেন কিনা তাও নিশ্চিত হওয়া যাবে মঙ্গলবার।

২৫ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ক্যাম্পের প্রথম দিন অনুপস্থিত ছিলেন সাকিব। কেন তিনি নেই, সেই কারণ খোদ নির্বাচকরাও জানাতে পারছিলেন না, জানতেন না টিম ম্যানেজারও। পরে জানা যায় কোচের কাছ থেকে অসুস্থতায় ছুটি নিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় দিনের অনুশীলনে এলেও অর্ধেক থেকে চলে যান। তৃতীয় দিন থেকেই আবার নেই সাকিবের দেখা। রবি ও সোমবার দুদিনই নিজেরা ভাগাভাগি হয়ে দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল। তাতে ছিলেন না সাকিব।

দলের অপারেশন্স ম্যানেজার আকরামের সঙ্গে কথা হয়নি, আকরাম জানাতে পারেননি ম্যানেজারের সঙ্গে কথা হয়েছে কিনা। কেবল কোচের কাছ থেকেই সাকিবের ছুটি নেওয়ার কথা জেনেছেন আকরাম, ‘আপনাদের থেকেই শুনছি যে যাবে কিনা ইত্যাদি। তো ও কোচের কাছ থেকে দুদিনের ছুটি নিয়েছে তাই অনুশীলনে নেই। ও খেলছে কিনা কালকে আমরা বিস্তারিত জানিয়ে দেব।’

ধর্মঘটে যাওয়া ক্রিকেটারদের হয়ে দাবিপূরণের আশ্বাস পেয়ে সাকিব নিজেই খেলায় ফেরার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু একটি বেসরকারি টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে তার বেআইনি চুক্তির খবরে বিসিবি সভাপতির প্রতিক্রিয়ার পরই ঘটনার মোড় নেয় অন্য দিকে। চুক্তির নিয়ম ভঙ্গ করায় সাকিবের কাছে চিঠিও দিয়েছিল বোর্ড। এরপর থেকেই জাতীয় দলের অনুশীলনে সেভাবে সম্পৃক্ত থাকছেন না সাকিব।

শেষ পর্যন্ত সাকিব ভারতে না গেলে দলের কম্বিনেশন নিয়ে বেশ বিপাকে পড়ার দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে জানান বোর্ড প্রধান।

দ্য ডেইলি স্টার