স্পোর্টস ডেস্ক

০৭ নভেম্বর, ২০১৯ ১৫:১০

যেখানে মেসি-রোনালদোকে ছাড়িয়ে গেলেন রদ্রিগো

ছবি: টুইটার

ব্রাজিলে তাকে বলা হয় ‘নতুন নেইমার’। সান্তোষের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন। এবার ইউরোপে এসেও সেই ঝাঁঝ, নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন একেক ম্যাচে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে অভিষেকে করেছেন দুরন্ত এক হ্যাটট্রিক। এই হ্যাটট্রিকে ওলটপালট হয়েছে রেকর্ডের খাতাও। তিনি রদ্রিগো গোয়েজ, ১৮ বছরের তরুণ ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার।

বয়স ১৯-এ পৌঁছায়নি এখনও। ১৮ বছর ৩০১ দিন বয়সে এ হ্যাটট্রিকের দেখা পেলেন তিনি। এর আগে রেকর্ডটি ছিল কিলিয়ান এমবাপ্পের দখলে—২০ বছর ৩০৬ দিন। এই রিয়ালেরই কিংবদন্তি রাউল গঞ্জালেসের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে হ্যাটট্রিকও রদ্রিগোর। ম্যাচ শেষে এই শিষ্যকে নিয়ে জিদান শুধু বলেছেন, ‘সে আমাকে অবাক করেনি। সবকিছুই তার মধ্যে আছে।’

এদিকে, রদ্রিগো বলছেন- ‘বার্নাব্যু আমার নামে গান ধরতেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।’

এই ম্যাচে দুই পা এবং মাথার সমন্বয়ে গোল করে পারফেক্ট হ্যাটট্রিক করেছেন। বর্তমান বিশ্বের দুই সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পারফেক্ট হ্যাটট্রিক করতে পারেননি। মেসি তো তার পেশাদার ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত দেখাই পেলেন না। আর রদ্রিগো কি না এই পারফেক্ট হ্যাটট্রিকই করলেন রীতিমতো ইতিহাস গড়ে—চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে পারফেক্ট হ্যাটট্রিক করার রেকর্ড এখন রদ্রিগোর।

রদ্রিগো এখন পর্যন্ত রিয়ালের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৬ ম্যাচে ৫ গোল করেছেন। আর এ গোলসংখ্যায় সবচেয়ে স্মরণীয় তিনটি গোল তিনি পেয়েছেন কাল রাতে ‘পারফেক্ট হ্যাটট্রিক’-এর সৌরভ ছড়িয়ে।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের গোলের খাতা খুলতে ৪ মিনিট সময় নিয়েছেন রদ্রিগো। মার্সেলোর পাস থেকে বাঁ পায়ের শটে গোলটি করতেই বার্নাব্যুর স্বাগতিক সমর্থকেরা কুর্নিশ করেছেন রদ্রিগোকে। গানও ধরেছেন কেউ কেউ। সমর্থকদের প্রেরণা পেলে কী ঘটতে পারে তা তিন মিনিট পরই বুঝিয়ে দেন গা থেকে এখনো কৈশোরের গন্ধ না কাটা এ ফরোয়ার্ড। এবারও মার্সেলোর ক্রস থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে কোনো ম্যাচের প্রথম ৭ মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল করার রেকর্ডটি তখনই হয়ে যায় রদ্রিগোর।

রদ্রিগো চিত্রনাট্যের সেরা অংশটি তখনো বাকি ছিল। ৭ মিনিট পরই হ্যাটট্রিক হতে পারত সান্তোস থেকে উঠে আসা এ তরুণের। রিয়াল পেনাল্টি পেলেও শট নেন সার্জিও রামোস। ‘পানেনকা’ শটে গোলও পেয়েছেন রামোস। কিন্তু ওই পেনাল্টি রদ্রিগো নিলে এবং গোল করতে পারলে গড়তে পারতেন আরেকটি রেকর্ড। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে দ্রুততম হ্যাটট্রিকের রেকর্ড। তা না হলেও রদ্রিগোর মনে ক্ষোভ থাকার কথা না। মাঝে করিম বেনজেমার কাছ থেকে আরও দুই গোল পেয়েছে রিয়াল। এর মধ্যে একটি আবার রদ্রিগোর পাস থেকেই। কিন্তু এরপরও রিয়াল সমর্থকদের মনে কোথায় যেন কমতি থেকে যাচ্ছিল। রদ্রিগো সে কমতিটুকুও পূরণ করেছেন খেলার যোগ করা সময়ে হ্যাটট্রিক করে।

বেনজেমার পাস থেকে ডান পায়ের টোকায় রদ্রিগোর শেষ গোলটি তার ক্যারিয়ারের জন্যই ঐতিহাসিক। বার্নাব্যুতে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক এবং সেটি আবার চ্যাম্পিয়নস লিগেও তার প্রথম—রীতিমতো পারফেক্ট হ্যাটট্রিক। দুই পা এবং মাথার সমন্বয়ে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত