নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ ডিসেম্বর, ২০১৫ ২২:১৭

মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি প্রার্থীদের কেউ, ৩ জন স্বশিক্ষিত

সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনে সাত মেয়র পদপ্রার্থীর মধ্যে তিনজন ‘স্বশিক্ষিত’। বাকি চারজনও মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। কিন্তু প্রায় সবাই বেশ সম্পদশালী। চারজন ব্যবসায়ী; বাকিরা যথাক্রমে জায়গা কেনাবেচা করেন, রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক ও কৃষিজীবী। তবে কারও বিরুদ্ধেই মামলা চলমান নেই।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা প্রার্থীদের হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী জাকারিয়া আহমদ (পাপলু) মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। পেশায় ব্যবসায়ী জাকারিয়ার বার্ষিক আয় ১৪ লাখ ৫২ হাজার ২৩৬ টাকা। তাঁর অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬৪ টাকার; স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ২২ দশমিক ৮৮ শতক কৃষি-অকৃষি জমি এবং চারটি দোকান। তাঁর ৪২ লাখ ৭২ হাজার ৯১১ টাকার ঋণ রয়েছে।

বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী (শাহীন) ‘স্বশিক্ষিত’। পেশায় তিনিও ব্যবসায়ী। বার্ষিক আয় ৮ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬০ টাকা। স্ত্রী ও নিজের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকার। ব্যক্তিগত স্থাবর সম্পদ রয়েছে ১ হাজার ২৭৫ শতক কৃষি-অকৃষি জমি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালক হওয়ার সুবাদে তাঁর ঋণ রয়েছে ৩৯ কোটি ৩৮ লাখ ৮ হাজার ৬৩৬ টাকার।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল জব্বার চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। ‘স্বশিক্ষিত’ সিরাজুল পেশায় কৃষিজীবী। বার্ষিক আয় তিন লাখ টাকা। স্ত্রী ও নিজের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৯৫০ শতক কৃষি-অকৃষি জমি এবং ১১০ শতকের ওপরে একটি বাড়ি। তাঁর কোনো ঋণ বা দেনা নেই।

জাতীয় পার্টি-সমর্থিত প্রার্থী মো. সুহেদ আহমদ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। পেশায় ব্যবসায়ী সুহেদের বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রী ও নিজের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে সাড়ে ২৩ শতক অকৃষি জমি রয়েছে। তাঁর ২০ লাখ টাকার দেনা রয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলাম ‘স্বশিক্ষিত’। তাঁর পেশা ‘জায়গা কেনাবেচা’। বার্ষিক আয় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। তাঁর ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে; স্থাবর সম্পদের মধ্যে একটি একতলা দালান রয়েছে। আমিনুলের কোনো দায়দেনা নেই।

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তিনি স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক। বার্ষিক আয় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর ও স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার; ব্যক্তিগত স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৩৭ শতক কৃষি-অকৃষি জমি, একটি দালান এবং একটি বাড়ি। তাঁরও কোনো দায়দেনা নেই।

মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করা আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুর রহমান পেশায় ব্যবসায়ী। বার্ষিক আয় ৪ লাখ ৩০ হাজার ৮০০ টাকা। নিজের, স্ত্রীর ও নির্ভরশীলদের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৫৪ লাখ ৪৫ হাজার ১৬১ টাকার। এ ছাড়া স্ত্রী ও মেয়ের স্বর্ণালংকার রয়েছে ৫১ ভরি। ব্যক্তিগত স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে কিছু কৃষি-অকৃষি জমি, ১২টি দোকান ও আটটি অ্যাপার্টমেন্ট। একটি ব্যাংকে তাঁর ১৫ লাখ টাকার দেনা রয়েছে।

প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার চিত্র দেখে হতাশা ব্যক্ত করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সিলেট সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, সাত প্রার্থীর একজনও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে না পারার বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক।

সূত্র: প্রথম আলো

আপনার মন্তব্য

আলোচিত