এস আলম সুমন, কুলাউড়া

২২ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ০১:৩২

কুলাউড়া রেল স্টেশনকে ২য় গ্রেডে অবনমিত করায় ক্ষোভ, স্টেশন মাস্টার অবরুদ্ধ

কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনকে ১ম গ্রেড থেকে ২য় গ্রেডে অবনমিত করায় ফুসে ওঠেছে উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ। এরই প্রতিবাদে ২১ ফেব্রুয়ারি রোববার ৭ ঘন্টা স্টেশন মাস্টার মির্জা শামসুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখে কুলাউড়া রেলওয়ে শ্রমিক লীগসহ বিক্ষুব্দ জনতা।

এছাড়াও সন্ধ্যায় স্টেশনের সম্মুখে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সোমবার সকাল ১১টায় সর্বস্তরের কুলাউড়াবাসী রেলস্টেশনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি আহবান করা হয়েছে।

সুত্রে জানা যায়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম জুনিয়র পার্সোনাল অফিসার-২ (পূর্ব) মো. সিরাজ উল্যাহ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ডিটিও ঢাকার অধীনস্থ কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনকে ১ম গ্রেড থেকে ২য় গ্রেডে অবনমিত করে স্টেশন মাস্টার মির্জা শামসুল ইসলামের স্থলে হরিপদ সরকারকে পদায়ন করা হয়। এবং গৌরীপুর ময়মনসিংহ স্টেশনকে ২য় গ্রেড থেকে ১ম গ্রেডে উন্নিত করে মির্জা শামসুল ইসলামকে সেখানে পদায়ন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোববার কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনকে ১ম গ্রেড থেকে ২য় গ্রেডে অবনমিত করার অফিস আদেশের খবর পেয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে কুলাউড়া রেলওয়ে শ্রমিক লীগসহ স্টেশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রতিবাদে সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্টেশন মাস্টার মির্জা শামসুল ইসলামকে তার অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রেল কর্তৃপক্ষ এই হঠকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে ট্রেন পথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. নাজমুল হক বলেন, শুধুমাত্র স্টেশন মাস্টারের বদলির জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১ম গ্রেডের এ  রেলস্টেশনকে ২য় গ্রেডে নামিয়ে আনা উচিত হয়নি। কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে কুলাউড়া স্টেশন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে।

এদিকে রোববার সন্ধ্যা ৭টায় কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ৩নং ওয়ার্ডের আয়োজনে স্টেশনের সম্মুখে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ৩নং ওয়ার্ডের সম্পাদক এম হাজির আলী’র সভাপতিত্বে ও ৬নং ওয়ার্ড সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মনি’র পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান সজল, উপজেলা জাসদের সভাপতি ময়নুল ইসলাম শামীম, সাপ্তাহিক সীমান্তের ডাকের সম্পাদকমন্ডলীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম টিপু,  ট্রাফিক ইনস্পেক্টর হুমায়ুন কবির পাটওয়ারি, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল নূর হিরা, কোষাধক্ষ মো. বদরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মো. আব্দুল জলিল, ছাত্রনেতা এম. ফয়েজ উদ্দিন, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক প্রচার সম্পাদক আতিকুর রহমান আখই প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার পাঁচ সহস্রাধিক যাত্রী প্রতিদিনই এই রেল স্টেশন দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। শুধুমাত্র কিছু দূর্নীতিবাজ ও স্বার্থান্বেষী রেল কর্মকর্তাদের সুবিধার্থে ঐতিহ্যবাহী এই রেল স্টেশনকে ১ম গ্রেড থেকে ২য় গ্রেডে নামিয়ে ফেলা উচিত হয়নি। অনতিবিলম্বে রেলওয়ে কর্তপক্ষকে এ হঠকারী আদেশের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় রেলপথ অবরোধসহ কঠোর আন্দলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে’। এছাড়াও আগামীকাল সোমবার বেলা ১১টায় সর্বস্তরের কুলাউড়াবাসীর আয়োজনে রেলস্টেশনে মানবন্ধন কর্মসূচিতে সর্বস্তরের জনগণকে অংশগ্রহণে আহ্বান জানান তারা।

কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মির্জা শামসুল ইসলাম প্রথমে ১ম গ্রেড থেকে ২য় গ্রেডে অবনমিত করার বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে আদেশটি দেখানোর জন্য বললে তিনি বলেন, ‘আমাকে অহেতুক অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গ্রেড পরিবর্তন করার দায়িত্ব আমার নয়। এটা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত’।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত