নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ এপ্রিল, ২০১৬ ২০:১৪

‘পারিবারিক দ্বন্দ্বে’ যুদ্ধাপরাধের মামলা- দাবি গোলাপের : আ. লীগের প্রার্থী পরিবর্তন

পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন  হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ১১ নং গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল খায়ের গোলাপ। জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এই একই গোষ্টি তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের করে বলেও অভিযোগ করেন গোলাপ।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকম'র কাছে এমন অভিযোগ করেন। যদিও যুদ্ধাপরাধের মামলার অভিযোগে এই ইউনিয়নে গোলাপকে দেওয়া মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাঁর বদলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমাদুল হক মুকুলকে এই ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার মুকুলকে মনেনানয় প্রদান করে দলীয় হাইকমান্ড। এর আগে গত ২৪ এপ্রিল ইউনিয়ন আ' লীগের সভাপতি আবুল খায়ের গোলাপকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছিলো আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।  গোলাপ এই ইউনিয়নের  টানা দু'বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান।

বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটমক-এ ‘যুদ্ধাপরাধ মামলার’ আসামি আ.লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ ছায়েদুল হক সুমনের বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়, 'গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।'

তবে  আবুল খায়ের গোলাপ দাবি করেন, তার চাচাতো ভাই  মোঃ. শাহনেওয়াজের সাথে দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের জের ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে শতাধিক মামলা করেন শাহনেওয়াজ। এই বিরোধের কারণেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগেও মামলা করা হয় বলে দাবি তাঁর।

গোলাপ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি নবম শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম। তখন যুদ্ধের কোনো পক্ষেই আমি অংশ নেইনি।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের মিথ্যে অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আজ আমার বদলে মুকুলকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন।

দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাহার  করা হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলেও জানান গোলাপ।

এরআগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটটুডে বরাবরে একটি প্রতিবাদ পাঠান চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল খয়ের গোলাপ।

প্রতিবাদে তিনি লিখেন, 'আমার বিরুদ্ধে আনা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং হয়রানিমুলক।'

তিনি বলেন, '১৩ বছর ধরে তিনি জনগণের ভোটে গজনাইপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি গজনাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগেরও সভাপতি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বারবার তাঁর সাথে পরাজিত গোষ্ঠী তাঁর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টায় জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করতে সম্পূর্ণ মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত মন্ত্রী ও সাংসদ দেওয়ান ফরিদ গাজী ও নবীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিখিতভাবে বলেছেন যুদ্ধাপরাধের সাথে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। এমন কি যিনি মিথ্যে মামলার বাদী তিনিও এফিডেভিট দিয়ে বলেছেন তিনি মামলা করেননি। এই মামলা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। এ থেকেই বিষয়টি পরিষ্কার তাঁকে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করতে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমুলক প্রচারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।'

আপনার মন্তব্য

আলোচিত