নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ মে, ২০১৬ ০০:৩৮

চা বাগান থেকে সরাতে হবে তবু ‘উন্নয়ন কাজ’ চলছে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে

ছয় মাসের মধ্যে তারাপুর চা বাগান থেকে সরিয়ে নিতে হবে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আদালতের এই নির্দেশনার পরও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ চলছে এই প্রতিষ্ঠানটিতে।

তবে শিল্পপতি রাগীব আলীর মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠানসহ তারাপুর চা বাগান ধ্বংস করে গড়ে ওঠা সকল স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যই সরিয়ে নিতে বলে জানিয়েছেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।

সোমবার রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের নিচ তলায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। মেঝেতে লাগানো হচ্ছে দামি টাইলস। কয়েকটি দেয়ালের সংস্কার করা হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে কিছু কক্ষও নির্মান করা হচ্ছে।

নির্মান কাজে সংশ্লিস্টরা জানিয়েছেন, প্রায় মাসখানেক ধরে এই সংস্কার কাজ চলছে।

হাসপাতালটির এক কর্মচারী জানান, রোগীদের সেবাবৃদ্ধি ও চিকিৎসক ও স্টাফদের স্থানসংকুলানের জন্য কিছু সংস্কার কাজ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে রাগীর রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মেজর জেনারেল (অব) নাজমুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেন নি।

তারাপুর চা বাগান দখল করে ১৯৯৫ সালে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গড়ে তুলেন রাগীব আলী।



গত ১৯ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের এক রায়ে, রাগীব আলীর তারাপুর চা বাগানের লিজগ্রহীতাকে হওয়াকে প্রতারণামূলক আখ্যায়িত করে বাগান উদ্ধারের নির্দেশ দেন।

তারাপুর চা বাগানে নির্মিত রাগীব রাবেয়া মেডিকল কলেজসহ সব অবকাঠামো ৬ মাসের মধ্যে অপসারণ করে সে জায়গায় চা বাগান করার আদেশ দেওয়া হয় এই রায়ে। রাগীব আলীগং তা করতে ব্যর্থ হলে পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের সহায়তা নিয়ে স্থাপনা অপসারণের কথাও উল্লেখ করা হয় রায়ে। তবে এ খাতে ব্যয় হওয়া অর্থ জেলা প্রশাসক রিট আবেদনকারীদের কাছ থেকে গ্রহণ করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়।

এই রায়ের পর রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের ভাগ্যে কী আছে এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন অনেকে। বিশেষত এই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দেয় উদ্বেগ।

এ অবস্থায় গত রোববার চা বাগান ও বাগান সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো রাগীব আলীর দখল থেকে উদ্ধার করে সেবায়েত পঙ্কজ গুপ্তকে বুঝিয়ে দেয় প্রশাসন। ৪২২.৯৬ একর ভূমির বাগানের মধ্যে ৩২৩ একর ভূমি তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এতে প্রায় ২৫ বছর পর রাগীব আলীর দখলমুক্ত হয় তারাপুর চা বাগান।

এই উদ্ধার অভিযানের পরে বাগান থেকে মেডিকেল কলেজকে সরিয়ে নিতে হবে বলেই মত প্রকাশ করেছেন অনেকে।

রোববার উদ্ধার অভিযান শেষে অভিযানে নেতৃত্বপ্রদানকারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানও জানিয়েছেন, আদালত স্থাপনা অপসারণে ছয় মাসের সময় বেঁধেদিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে সকল স্থাপনা অপসারণ করতে হবে। আর অপসারণ না করলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মেডিকেল কলেজে সংস্কার কাজ চলার ব্যাপারে সোমবার মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত