সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ মে, ২০১৬ ২০:০৪

'সামাজিক সচেতনতা মাদক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে'

'বর্তমান বিশ্বে মাদকাশক্তি এবং মাদকদ্রব্যের অপ ব্যবহার এবং অবৈধ পাচার সমাজ সভ্যতা বিকাশে একটি প্রধান অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে। সর্বনাশা মাদক আমাদের দেশের তরুণ ও যুবকদের কঠিন পথে ঠেলে দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে মাদকের অবাধ ব্যবহার উদ্বিগ্ন করে তুলেছে অভিভাবকদের। এর একটিই কারণ মাদকের অবাধ পাচার রোধ করা যাচ্ছেনা। এটি রোধ করা এককভাবে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে কোনভাবে সম্ভব নয়। এটি বন্ধে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্ঠা প্রয়োজন। সামাজিক সচেতনতাই মাদক নিয়ন্ত্রনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।'

মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে সিলেটে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘মাদকবিরোধী সচেতনতা সৃষ্টিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

সিলেট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর এ সভার আয়োজন করে। সভায় সিলেটের সকল স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি মাদক বিরোধী কনভেনশন করার ঘোষনা দেওয়া হয়।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও জেলা কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাস গুপ্তের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. জামাল উদ্দিন আহমেদ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (এসএমপি) কামরুল আহসান, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মিজানুর রহমান, সিলেটের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আ লিক উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর আহমদ। শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্লাহ কাজল।

অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ আমিনুর রহমান, কলামিষ্ট আফতাব চৌধুরী, নবীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম,সিলেট সরকারী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী রেজাউল কবীর রাফি, পুলিশ লাইনস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার। এইম ইন লাইফ, বাধান, প্রশান্তি, প্রত্যাশাসহ বেশ কিছু মাদকাশক্তি পুনবার্সন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, ইউএনওডিসির সূত্রমতে বিশ্বে বার্ষিক হেরোইনের ব্যবহার ৩৪০ টন। বিশ্ববাজারে হেরোইনের বার্ষিক প্রবাহ ৪৩০/৪৫০ মেট্রিক টন। এরমধ্যে মায়ানমার ও লাওস থেকে আসে ৫০ টন আর বাকি ৩৮০ টন হেরোইন ও মরফিন উৎপাদন হয় আফগানিস্তানে। আফগানিস্তানে বছরে মাত্র ৫ টন হেরোইন ব্যবহার ও জব্দ করা হয়। অবশিষ্ট ৩৭৫ টন পাশ্ববতী দেশের মধ্য দিয়ে সারাবিশ্বে পাচার হয়। আর ভৌগলিক অবস্থানের কারনে বাংলাদেশ প্রধান মাদক উৎপাদনকারী অ লের মধ্যবর্তী হওয়ায় মাদকের অবৈধ পাচার রোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা।

সভায় জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বিশ্বের প্রায় ৫০ কোটি মানুষ মাদকাশক্ত। সারাদেশে মাদকের বিস্তার ক্রমাগত বাড়ছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধবংস করে মাদক ব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার, হাজার কোটি টাকা।

সভায় বক্তারা মাদক ব্যববসায়ীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান। যেখানেই মাদক ব্যবসায়ী সেখানেই এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন আইনশৃংঙ্খলাবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত