সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ মে, ২০১৬ ১৯:৩৯

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাঙালির ঠিকানা খোঁজার যুদ্ধ : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাঙালির ঠিকানা খোঁজার যুদ্ধ। বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালীর ইতিহাসের এক হিরন্ময় অধ্যায়। আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের যোগসূত্রতা নিহিত রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের পাতায়।

তিনি তরুণ শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে দেশপ্রেমের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে বর্তমান সরকারের জঙ্গীবাদ-মৌলবাদ বিরোধী আন্দোলসহ চলমান যুদ্ধপরাধীদের বিচারের কাজকে গতিশীল করার সংগ্রামে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।

মন্ত্রী ইনু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা রুখে দাঁড়াতে তরুণ প্রজন্মের ইতিহাস চর্চার কোন বিকল্প নেই। পৃথিবীর যেকোন জাতির চেয়ে বাঙালী জাতির ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ। এ ইতিহাসকে কখনো দ্বিখন্ডিত বা বিকৃত করার সুযোগ নেই। বইপড়া উৎসবে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো চিরকাল আমাদের পথ দেখাবে। তাই সেই ইতিহাসে দীক্ষিত প্রজন্মের পথভ্রষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই। বই কখনো প্রবঞ্চনা করে না।

শিক্ষার্থীদের তিনি বলেন, আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতে হবে। কিন্তু পা থাকতে হবে মাটিতে। তিনি তরুণ শিক্ষার্থীদের দুর্নীতি, বৈষম্য ও নারী-পুরুষের বিভেদ মোচনের লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বই আমাদের ইতিহাস পাঠের অনিন্দ্য পাঠশালা। তাই শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের বই পাঠে মনোযোগী হয়ে নিজেদের অন্তরকে আলোকিত করার পাশাপাশি দেশকেও আলোকিত করতে পারে।

তিনি বুধবার সিলেটে যুগান্তর স্বজন সমাবেশ আয়োজিত অষ্টম বইপড়া উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন। বেলা ৩ টায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। যুগান্তর সিলেট ব্যুরো প্রধান ও বইপড়া উৎসবের প্রধান উদ্যোক্তা রেজওয়ান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আমিনুল হক ভুঁইয়া, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ রফিকুল হক বীরপ্রতীক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু, সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান আহমদ ও নারী নেত্রী শামীমা আখতার।

‘চতুষ্টয়’- বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সমন্বয় পরিষদ এর পরিবেশনায় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য এ সমাপনী অনুষ্ঠানে বইপড়া উৎসবের সূচনা ও অগ্রযাত্রা নিয়ে বক্তব্য রাখেন স্বজন সমাবেশের বিভাগীয় সমন্বয়কারী, বইপড়া উৎসবের প্রধান উদ্যোক্তা সহকারী অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেব। জাতীয় সঙ্গীতের পরপরই অতিথিবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান জেলা স্বজন, চতুষ্টয়, এমসি কলেজ, সিলেট কমার্স কলেজ ও সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ স্বজন সমাবেশের নেতৃবৃন্দ। যুগান্তর স্বজন সমাবেশের সাধারণ সম্পাদক সুবিনয় আচার্য্যরে পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা স্বজনের সভাপতি মবরুর আহমদ সাজু, সহ সভাপতি প্রভাষক সুমন রায়, অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিক তালুকদার, জান্নাতুল ফেরদৌসি তারিন। আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠানে অষ্টম বইপড়া উৎসবের শ্রেষ্ঠ পাঠক শাবির শিক্ষার্থী ডেবিট দত্ত, সেরা পাঠক লিডিং ইউনিভার্সিটির ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসী তারিন, সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজের শিক্ষার্থী এ.এম. শাহরিয়ার আজিজ ও সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অনিক তালুকদারের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। শেষ পর্বে ‘চতুষ্টয়’র সমন্বয়ক শাহ শরিফ উদ্দিনের পরিচালনায় বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সমন্বয় পরিষদ ‘চতুষ্টয়’ এর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান ও কবিতা পরিবেশন করেন নৈরীতা পাল, তোহা, সাগর, মৌ, চন্দ্রিমা দাস, আলমগীর ফারজান, ইমরান সোহান।

‘জ্ঞানের আলোয় অবাক সূর্যোদয়!/ এসো পাঠ করি/ বিকৃতির তমসা থেকে/ আবিস্কার করি স্বাধীনতার ইতিহাস’ স্লোগানকে সামনে রেখে যুগান্তর স্বজন সমাবেশ এর আয়োজনে বইপড়া উৎসব ২০০৬ সালে প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সালের বইপড়া উৎসবের উদ্বোধন হয় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। এ বছরের মার্চ মাসে নির্বাচিত গ্রন্থ ‘দুই সৈনিক’ এর উপর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত