নিউজ ডেস্ক

০৫ জানুয়ারি, ২০১৫ ২৩:৩৬

৫ জানুয়ারিঃ সিলেট বিভাগের বিভিন্নস্থানে সংঘর্ষে পুলিশ সহ আহত ৪০, আটক অর্ধশত

৫ জানুয়ারি সোমবার ২০ দলীয় জোটের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোটের সংঘর্ষের  ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্য সহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে ।

সুনামগঞ্জে আ'লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ২০
সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ৩ দফা সংঘর্ষে সাংবাদিক, পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কমপক্ষে ২৫ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়েছে পুলিশ। সংঘর্ষের পর শহরের বিভিন্ন মোড়ে বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

৫ জানুয়ারি সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় শহরের পুরাতনকোর্ট এলাকা থেকে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল বের হয়। মিছিলটি থানার সামনের সড়কে পৌঁছালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রমিজ বিপণির কার্যালয় চত্বর থেকে মিছিল বের করে। এ সময় দু'পক্ষ মুখোমুখী হলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে সুনামগঞ্জ ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সহ কমপক্ষে ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে ।

কুলাউড়ায় সাবেক এমপি শাহীনসহ আহত ১৩ , আটক ৩
কুলাউড়ায় বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এতে সাবেক এমপি এম এম শাহীন ও তিন পুলিশ এবং এক সাংবাদিকসহ ১৩ জন আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মইজ উদ্দিনসহ তিনজনকে আটক করেছে।

ফেঞ্চুগঞ্জে পুলিশ-শিবির সংঘর্ষ
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই শহীদ (৪৮), কনস্টেবল আবু তালেব (২৪), কন্সটেবল ফিরোজ (৩২) সহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার মাইজগাঁও বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ফেঞ্চুগঞ্জের গিলাছড়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারী রোকনুজ্জামান চৌধুরী, ছাত্রশিবির নেতা সায়েমুল আরেফিন, হাসান,মুকিত সহ পাঁচজন জামায়াত- শিবির কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।



বড়লেখায় বিএনপি অফিসে ভাংচুর ছাত্রলীগের, পৌর মেয়র সহ আহত ১০

বড়লেখায় বিএনপি অফিসে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ । ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে সমাবেশ করতে অফিসে জড়ো হলে ছাত্রলীগ কর্মীরা বিএনপি অফিসে হামলা চালায়।

এই সময় দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংর্ঘষ হয় । এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা বিএনপি অফিসে ঢুকে ভাংচুর চালায় । এতে বিএনপি নেতা ও পৌর মেয়র ফখরুল ইসলাম সহ ১০ জন আহত হয়েছেন ।

সিলেটে শিবির পুলিশ সংঘর্ষে আহত ৫, ছাত্রদল নেতা ফয়েজ আটক
সিলেটে শিবিরের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে, ছাত্রদলের একটি মিছিল থেকে জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমদ চৌধুরী ফয়েজকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার দুপুরে নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় কালো পতাকা মিছিল বের করে শিবির কর্মীরা। এসময় মিছিল থেকে বেশ কয়েকটি গাড়ী ভাংচুরের পাশাপাশি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। এক পর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দুপুর সোয়া ২টার দিকে নগরীর জিন্দাবাজার এলাকা থেকে মিছিল বের করে ছাত্রদল। পুলিশ তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় মিছিল থেকে জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আহমেদ চৌধুরী ফয়েজকে আটক করে পুলিশ।
এছাড়া নগরীর সোবহানী ঘাটে ঝটিকা মিছিল বের করে জেলা ও মহানগর বিএনপি।


নগরীর কয়েকটি জায়গায় গাড়ি ভাংচুর , পৃথক অভিযানে আটক ৪
নগরীর ধোপাদিঘিরপাড় ও শিবগঞ্জে গাড়ি ভাংচুর করেছে ছাত্রদল । ধোপাদিঘিরপাড়ে আকস্মিক হামলা চালিয়ে ৭ টি গাড়ি ভাংচুর করে । রাত ৯টার দিকে শিবগঞ্জে ২টি সিএনজিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় ছাত্রদল কর্মীরা । তবে এই দুই ঘটনায় কাউকে তাৎক্ষনিকভাবে আটক করতে না পারলে পরে বিভিন্ন স্থান থেকে ৪ জনকে আটক করেছে।

কানাইঘাটে সংঘর্ষ , আটক ২
৫ জানুয়ারী উপলক্ষ্যে কানাইঘাট গাছবাড়ী বাজারে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় ছাত্রদল লাঠি মিছিল বের করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান একপর্যায়ে মিছিলটি গাছবাড়ী আইডিয়াল কলেজের সম্মুখে আসা মাত্র বিপুল সংখ্যক পুলিশ মিছিলে বাধা প্রদান করলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে মিছিলকারীদের ধাওয়া ও ২টি টিআরশেল নিক্ষেপ করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ১১রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় বেশ কয়েকজন মিছিলকারী আহত হন। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায় নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঝিঙ্গাবাড়ী গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র জামায়াত নেতা হারুনুর   রশিদ (৩৬) ও আগতালুক কান্দি গ্রামের মৃত ফরমুজ আলীর ছেলে ছাত্রদল কর্মী আবুল বশর (২২) কে গ্রেফতার করে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া ও থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরী ঘটনাস্থলে ছুটে যান।  জানা যায় ৫ জানুয়ারী উপলক্ষ্যে গতকাল সোমবার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি জামায়াত জোট পাল্টাপাল্টি একই সময়ে মিছিল সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া সোমবার ভোর ০৬ টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়পর্যন্ত কানাইঘাট উপজেলা সদর, গাছবাড়ী বাজার ও সড়কের বাজারে ১৪৪ ধারা জারি করেন। বিএনপি জামায়াত জোটের নেতাকর্মীরা কানাইঘাট উপজেলা সদর ও সড়কের বাজারে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলের প্রস্তুতি নিলে বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় তারা মিছিল করতে পারেনি। তবে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে গাছবাড়ী বাজারে জোটের নেতাকর্মীরা লাঠি মিছিল বের করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গাছবাড়ী বাজারে ১৪৪ধারা ভঙ্গ করে বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা লাঠি মিছিল বের করে একপর্যায়ে তারা কর্তব্যরত পুলিশের উপর হামলা চালায়। পরে পুলিশ ২টিআরশেল ও ১১রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে গাছবাড়ী বাজার সহ উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার সড়কে গাছ কর্তন
পুলিশের সাথে বিএনপি ছাত্রদলের ধাওয়া

গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজার সড়কে অর্ধ কিলোমিটার জায়গার গাছ কেটে সড়কে অবরোধ করেছে বিএনপি ছাত্রদল।  এ ঘটনার পর বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। দুপুর ২টায় গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী পয়েন্ট এর তিন দিক থেকে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে একত্রিত হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় মিছিলকারীরা পিছিয়ে গিয়ে পুলিশকে লক্ষ করে ইট ও পাথর ছুড়ে মারতে থাকে। পুলিশ ও পাল্টা এ্যাকশনে নামে। প্রায় ১০ মিনিট ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী ছেড়ে উপজেলা সদর দপ্তরের কাছাকাছী অবস্থান নেয়।  


আপনার মন্তব্য

আলোচিত