জগন্নাথপুর প্রতিনিধি

১৭ নভেম্বর, ২০১৬ ২২:০১

জগন্নাথপুরে এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ইসহাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। এই স্কুলে প্রতিটি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে উন্নয়ন ও কোচিং ফি বাবদ অতিরিক্ত ৩ হাজার ৭০০ টাকা নেয়া হচ্ছে।

শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা জানান, স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার ফি বাবদ বিজ্ঞান বিভাগে ৫ হাজার ৭২০ টাকা এবং মানবিক বিভাগে ৫ হাজার ৬৩০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া নির্বাচনী পরীক্ষায় বিভিন্ন বিষয়ে অকৃতকার্যদের  কাছ থেকে বিভিন্ন হারে জামানত  বাবদ এক বিষয়ে ২ হাজার টাকা, দুই বিষয়ে ৪ হাজার টাকা, তিন বিষয়ে ৮ হাজার টাকা এবং চার বিষয়ে ১৬ হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। চলতি বছর এ স্কুল থেকে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে ৫৭ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।

স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী নাজমা বেগম জানায়, অতিরিক্ত অর্থ দিতে না পারায় সে ফরম ফিলাপ করতে পারেনি। রুকসানা বেগম জানায়, প্রতি বছরই এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন শিক্ষকরা।

একইস্কুলের শিক্ষার্থী ঝুমি বেগম জানায়, কোচিং ও উন্নয়ন ফী বাববদ মাত্রাতিরিক্ত ফি আদায়ের ফলে গরীব শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা বিপাকে পড়েছেন।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানাযায়, কেন্দ্র এবং বোর্ড ফি মিলিয়ে এসএসসির ফরম পূরণে ১৭৪০ টাকা প্রদানের কথা থাকলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ অস্বাভাবিক ফি আদায় করছেন। বিজ্ঞান বিভাগে ২০০০ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসা বিভাগে ১৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জগন্নাথপুর উপজেলার পৌর এলাকার ইসাকপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফি আদায়ের ক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের কোন নিয়মনীতি মানতে নারাজ। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের ইচ্ছামতো ফি আদায় করে যাচ্ছেন। তারা শিক্ষা বোর্ডের নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে এবারের এস.এস.সি পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিজ্ঞান শাখায় ৫৭২০ টাকা এবং মানবিক শাখায় ৫৬৩০ টাকা আদায় করা হয়েছে।

জগন্নাথপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ.কে.এম মখলেছুর রহমান বলেন, কেন্দ্র ও বোর্ড ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। আর কোচিং এর নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী কোচিং বন্ধ করা হয়েছে। এ ধরনের কোন অভিযোগও আমাদের কাছে নেই। তবে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা শেষ হলে আমি এসব বিষয় খতিয়ে দেখব এবং প্রমাণ মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইসহাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর জহুর অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, কোচিং ও উন্নয়ন ফি সহ বিজ্ঞান বিভাগে ৫ হাজার ৭০০ ও মানবিক বিভাগে ৫ হাজার ৬০০ টাকা করে নিচ্ছি। অবৈতনিক স্কুল উন্নয়ন খাতে ৭০০ আর স্কুলে শিক্ষার মান ধরে রাখার জন্য শিক্ষককদের অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় তাই কোচিং ফি বাবদ ৩ হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। যাদের সামর্থ নেই তাদের কোচিং ফি দিতে হয় না। এসব টাকা আদায়ের জন্য কোন রেজুলেশন করা হয়নি ও বোর্ডের টাকার মানি রিসিট দেয়া হয় কিন্তু উন্নয়নের টাকার কোন রিসিট দেয়া হয় না।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বদরুল ইসলাম জানান, ফরম ফিলাপ বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে বলেন, আমরা উপজেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ স্কুল। আমরা অতিরিক্ত কোন টাকা নেই না। এখানে কোন অনিয়ম হয়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত