মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ

২৬ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ০১:০৮

দালালের মাধ্যমে লেবানন গিয়ে ৩ বছর ধরে নিখোঁজ নবীগঞ্জের নারী

থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ২

মানবপ্রাচারকারীদের মাধ্যমে লেবানন গিয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের স্বপ্না নামের এক নারী ৩ বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁর কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় স্বপ্নার স্বজনরা থানায় মামলা করলে দুই দালালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

স্বপ্নার পরিবার সূত্রে জানা যায়, দরিদ্র পিতা-মাতার মুখে হাসি ফুটাতে ৩ বছর আগে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে লেবানন পাড়ি জমান নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামের নুর ইসলামের ২১ বছর বয়সী মেয়ে স্বপ্না বেগম। সেখানে তাকে গৃহকর্মীর চাকুরী প্রদান এবং প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা বেতন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে স্বপ্নাকে সাথে করে নিয়ে যায় একই ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামের হারুন মিয়ার পুত্র লেবানন প্রবাসী জিলু মিয়া। ৭০ হাজার টাকা গ্রহণ করে তার পিতা হারুন মিয়া।

লেবাননে যাওয়ার পর মা বাবার সাথে মাত্র এক দিন মোবাইল ফোনে কথা বলেছিল স্বপ্না। এর পর থেকেই যোগযোগ নেই। একে একে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও হদিছ মিলছে না স্বপ্নার। সে বেঁচে আছে কি না তাও জানেন না পরিবারের সদস্যরা।

স্বপ্নার মা সুফিয়া বিবি বলেন, তিন বছর ধরেই দালালরা আশ্বস্থ করে আসচে- 'স্বপ্না ভালো আছে, কয়েক দিনের মধ্যেই দেশে ফিরে আসবে।' কিন্তু তিন বছর ধরেই স্বপ্নার সাথে আমাদের কোনো যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেনি তারা।

এদিকে, গত ২০ দিন পূর্বে দালাল জিলু দেশে আসার খবর পেয়ে স্বপ্নার স্বজনরা খোঁজ খবর নিতে জিলুর বাড়িতে যান। এ সময় স্বপ্না বেগমের মা বাবাকে মেয়ের আশা ছেড়ে দিতে বলে জিলু মিয়া, কান্নাজড়িত কন্ঠে এমনটি জানান স্বপ্নার মা সুফিয়া বিবি।

তিনি আরো জানান, জিলুর কথাবার্তায় তাদের সন্দেহ হলে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসীকে অবগত করেন। অবশেষে গত শুক্রবার রাতে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন স্বপ্নার মা সুফিয়া বিবি। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার সকালে জিলু ও তার পিতা হারুন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ।

নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম আতাউর রহমান জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে মানবপাচারকারী হিসেবে জিলু মিয়া ও তার পিতা হারুন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে হবিগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত