বিশ্বনাথ প্রতিনিধি

১৬ মে, ২০১৭ ১৬:২৩

বিশ্বনাথ থানায় যুবলীগ নেতাকে নির্যাতন, ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

সিলেটের বিশ্বনাথে ২৪ দিন আগে উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত মহিলা হত্যার ঘটনায় এক যুবলীগ নেতাকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ মে) দুপুরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাকন দের আদালতে মামলাটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

দীর্ঘক্ষণ শুনানি শেষে আসামি যুবলীগ নেতা ইমরানকে কবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং নির্যাতন করা হয়েছে কিনা? তা তদন্ত সাপেক্ষে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ সার্কেল) কবীর আহম্মেদকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।

এর আগে ৩০ এপ্রিল আইনজীবীদের মাধ্যমে আদালতে গ্রেপ্তারকৃত যুবলীগ নেতা ইমরান পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ করেন, দীর্ঘ দুই দিন থানা হেফাজতে রেখে তাকে অমানবিক পুলিশি নির্যাতন করা হয়। এরপর ২৪ এপ্রিল সোমবার বিকেলে রিমান্ড চেয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

আদালতে দাখিলকৃত ওই অভিযোগে বলা হয়, ২২ এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের আল-মক্কা রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় রেস্টুরেন্টের মালিক ছাড়াও পাঠাকইন গ্রামের নুর উদ্দিন, রামচন্দ্রপুরের আছাদ মিয়া, বিশ্বনাথ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক আলতাব হোসেন, দৌলতপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দবির মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

এরপর রাতে থানা হাজতে খাবার নিয়ে যান ইমরানের বড় ভাই আব্দুল আলীম খান, খালাতো ভাই আব্দুল হক ও আছাদ মিয়া। পরদিন ২৩ এপ্রিল সকালে ইমরানের মা আছারুন বিবি, বড়বোন সারী বেগম ও সেলিনা আক্তার স্বপ্না থানা হাজতে তাকে দেখতে যান। এ সময় তারা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পান। মা ও বোনদের কাছে সে জানিয়েছে খুনের দায় স্বীকার না করায় থানার ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেন তাকে (ইমরানকে) ইলেকট্রিক শক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে মুমুর্ষ অবস্থায় বিশ্বনাথ উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়েছেন। কিন্তু পরদিন ২৪ এপ্রিল তাকে আদালতে প্রেরণের ফরোয়ার্ডিংয়ে চিকিৎসার কথা উল্লেখ না থাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে পরবর্তীতে আরেকটি ফরোয়ার্ডিং পাঠানো হয়। ইমরান আহমদ রিয়াদ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মরহুম মুসলিম আলীর ছেলে।

শুনানির বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামি পক্ষের আইনজীবী সুশিল চন্দ্র দাস প্রতিবেদককে বলেন, ইতিমধ্যে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ইমরানকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেন একইভাবে শুনানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে শীঘ্রই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হবে।

প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল শনিবার সকালে সিলেটের বিশ্বনাথের পাঠাকইন (রামচন্দ্রপুর) গ্রামের আইয়ুব আলীর বাড়ির সামনে থেকে ৩০ বছর বয়সী এক অজ্ঞাতনামা মহিলার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ওইদিন অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ১১) এবং মামলার বিশ্বনাথ জিআর নং (৬৫/১৭ইং)। এ ঘটনায় লাশের হাত ব্যাগে থাকা ছবির সূত্র ধরে ওইদিন সন্ধ্যায় যুবলীগ নেতা ইমরানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত