নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ জুন, ২০১৭ ০০:০৪

আদালত পাড়ার ক্যান্টিনে হামলাকারীদের একজন ‘তাঁতী লীগ নেতা’

রমজান মাসে খোলা রাখার 'অভিযোগে' সিলেট কালেক্টরেট ও জেলা আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে হামলাকারীদের একজন 'সিলেট জেলা তাঁতী লীগের নেতা।' তার নাম শাহ মো. আব্দুর রহিম। ক্যান্টিনে ভাংচুরকালে আইনজীবীদের সহায়তায় পুলিশ তাকে হাতেনাতে আটক করে।

তবে জেলা তাঁতী লীগ নেতারা দাবি করেছেন, মো. আব্দুর রহিমের সাথে তাঁতী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

এই হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় দুলাল মিয়া নামের আরেকজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ।

পরে ক্যান্টিনের ব্যবস্থাপক পাবেল মিয়া বাদী হয়ে আব্দুর রহিম ও দুলাল মিয়াসহ তিনজনকে আসামী করে মামলা করেন।

বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর বন্দরবাজার আদালতপাড়ার এই দুই ক্যান্টিনে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে ক্যান্টিন দুটির কর্মচারীসহ সাত জন আহত হন।  

হামলাকারী শাহ মো. আব্দুর রহিম নিজেকে জেলা তাঁতী লীগের যুগ্ন আহ্বায়ক দাবি করে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ফেস্টুন টানিয়েছেন। এসব ফেস্টুনে নিজের ছবি সাথে সিলেট আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শীর্ষ নেতাদের ছবিও যুক্ত করেছেন আব্দুর রহিম।

আদালত চত্বরেই আব্দুর রহিমের নামে টানানো একটি ফেস্টুনে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহউদ্দিন সিরাজের ছবি যুক্ত রয়েছে। ফেস্টুনে মিসবাহ সিরাজকে সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন প্রদানের দাবি জানিয়েছেন আব্দুর রহিম। এই ফেস্টুনেও নিজেকে জেলা তাঁতী লীগের যুগ্ন আহ্বায়ক দাবি করেছেন আব্দুর রহিম।

তবে সিলেট জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি মো. বাদশা গাজী সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আব্দুর রহিম তাঁতী লীগের কেউ নন। কোনোদিনই তিনি তাঁতী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় তাঁতী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহউদ্দিন সিরাজের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সিলেট কতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিন ও জেলা কালেক্টরেট ক্যান্টিনে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে একদল সন্ত্রাসী। রমজানে কেনো ক্যান্টিন খোলা রাখা হয়েছে এমন প্রশ্ন তুলে তারা ক্যান্টিন দুটি ভাংচুর করে ও ক্যান্টিনের কর্মচারীদের মারধর করে। এঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই দু'জনকে আটক করে। পরে এই দু'জনসহ আরো একজনকে আসামী করে একটি মামলা হয়েছে।

আরও পড়ুন : রমজানে খোলা রাখায় সিলেট আদালত পাড়ার ২ ক্যান্টিনে হামলা, আহত ৭


সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন আহমদ বলেন, এমন হামলা আদালত এলাকার নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আদালতের নিরাপত্তা জোরদারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, প্রশাসনকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আদালতপাড়ার অমসুলিম ও রোজা রাখতে অক্ষম অসুস্থ মুসলিম সদস্যদের জন্য প্রতিবছরই রমজানে ক্যান্টিন খোলা থাকে। তবে রমজানের পবিত্রতা যাতে নষ্ট না হয় এ জন্য ক্যান্টিনের সামনের দরজা বন্ধ রাখা হয়। কখনোই এধরণের হামলার ঘটনা ঘটেনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত