নিজস্ব প্রতিনিধি

১২ আগস্ট, ২০১৭ ২১:০৯

বন্যায় সুনামগঞ্জের ২৮৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা স্থগিত

পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির পানিতে সুনামগঞ্জের ৬ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। শনিবার দিনভর বৃষ্টির কারনে বিকেলের দিকে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়।

বন্যার পানি উঠায় ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার ২৮৫ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শনিবার ও রবিবার দুদিনের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা , দিরাই , দোয়ারাবাজার ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. বায়েজিদ খাঁন শনিবার বিকেলে বললেন, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা, দিরাই, দোয়ারাবাজার ও সদর উপজেলার ২৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলা শনি ও রবিবারের দু’দিনের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গত চার দিন ধরেই জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা ও দোয়ারাবাজার উপজেলার কমপক্ষে ৫০ হাজার পরিবারের দু’লক্ষাধিক নারী পুরুষ শিশু চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত চারদিনের টানা বৃষ্টিপাতের কারনে জেলার ৬টি উপজেলায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জেলা শহরের ষোলঘর পয়েন্টে শনিবার বিকেল পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি বিপদসীমানর ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গত ২৪ ঘন্টায় গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২২২ মি.মি। যার ফলে পাহাড়ি ঢলের সাথে সাথে জেলা বিভিন্ন নদ-নদী হাওড়ের পানির পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
 
জেলার তাহিরপুর উপজেলার সাবেক ইউপি সদস্য মিলন কুমার তালুকদার শনিবার বিকেলে জানান, শ্রুকবার সন্ধার পর সীমান্তনদী জাঁদুকাঁটার প্রবল পানির তোড়ে বাজারের বাঁধ ও পাঁকা সড়ক ভেঙ্গে কমপক্ষে ৫০ দোকানের কয়েককোটি টাকার মালামাল ভেসে গেছে ঢলে পানিতে এরপর শনিবার বিকেল থেকে ঢলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রক্তিনদীর ওপর তাহিরপুর- সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সাথে সংযোগস্থাপকারী আনোয়ারপুর সেতু ঝুঁকিপুর্ণ অবস্থায় রয়েছে । সেতুর দু’পাশের সংযোগ সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় পাঁকা ব্লক, সড়ক ও মাটি নদীর পেঠে চলে যাচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস শনিবার বিকেলে বললেন, ওপারের অব্যাহত ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারনে সুরমা নদীর পানি শনিবার দিনভর বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটিয়েছে। একই ভাবে জেলার তাহিরপুরের সীমান্তনদী জাঁদুকাঁটা, পাটলাই, রক্তি, মাহারাম, বাগলী ছড়া, ধর্মপাশার মহেষখোলা, বিশ্বম্ভপুরের চলতি নদী, দোয়ারাবাজারের খাঁসিয়ামারা ও ছাতকের সোনালী ছেলা নদী সহ জেলা সীমান্তবর্তী সব ক’টি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়েই শনিবার দিনভর প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম শনিবার বললেন, সুনামগঞ্জে শনিবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বন্যা মোকাবেলায় জেলার ১১ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকার পাশাপাশী প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত