মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

১০ অক্টোবর, ২০১৭ ০১:৩৪

দুই সঙ্গিনী পেলো উন্মত্ত ‘রসগোল্লা’

সঙ্গিনীর জন্য উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল ‘রসগোল্লা’ নামের হাতিটি। এই উন্মত্ততার বলি হয়েছেন দুটি মানুষ। শেষ পর্যন্ত সেই রসগোল্লা সঙ্গিনী পেল। একটি নয়, দুটি।

রসগোল্লার মালিক মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন। এ হাতিকে গাছের গুঁড়ি টানার কাজে লাগান তিনি।

বন বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি হাতিটি প্রচণ্ড জৈবিক তাড়নায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে। রসগোল্লার আক্রমণে ২৩ সেপ্টেম্বর কুলাউড়ার মেরিনা চা-বাগান এলাকায় গণি মিয়া (৪৫) নামের অন্য একটি হাতির মাহুত (হাতি দেখাশোনাকারী ব্যক্তি) মারা যান। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর তার আক্রমণে মারা যান মঙ্গল খাড়িয়া (৪০) নামের জুড়ীর পুটিছড়া এলাকার বনবাসী। এ ছাড়া হাতিটির আক্রমণের ভয়ে দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক দেখা দেয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ইউনিট ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে। তিন দিন চেষ্টা চালানোর পর ২৯ সেপ্টেম্বর একধরনের বিশেষ বন্দুকের (ট্রাংকুলাইজার গান) মাধ্যমে দুটি চেতনানাশক ইনজেকশন দিলে সে (হাতি) ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তার পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে বড় একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। পরদিন সেখান থেকে শিকলমুক্ত করে হাতিটিকে মাহুতকে দিয়ে জুড়ীর গোয়ালবাড়ী গ্রামে মালিকের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

হাতিটির এ আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা হাতিটির নারী সঙ্গী খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন। আর এই পরিপ্রেক্ষিতেই রোববার থেকে ‘ফুলকলি’ ও ‘ধলাসুন্দরী’ নামের পোষা দুই নারী হাতি তাকে সঙ্গ দিচ্ছে। ওই হাতিরা জুড়ী ও পার্শ্ববর্তী কুলাউড়া উপজেলায় বিভিন্ন সংরক্ষিত বনে বিচরণ করে।

কুলাউড়া উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইফ উদ্দিন আহমদ বলেন, জৈবিক চাহিদা মেটানো ও একাকিত্ব কাটিয়ে ওঠার উদ্দেশ্যে রোববার বিকেলের দিকে তার কাছে ‘ফুলকলি’ ও ‘ধলাসুন্দরীকে’ নিয়ে আসা হয়। এ সময় তাকে বেশ উৎফুল্ল দেখা যায়। রসগোল্লা এখন পুরোপুরি শান্ত।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত