নিউজ ডেস্ক

১৩ জানুয়ারি, ২০১৫ ০২:২২

বদরুজ্জামান সেলিম গ্রেফতার: আত্মগোপনে শীর্ষ নেতারা

রাজপথের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও লণ্ডন থেকে তারেক রহমান নির্দেশ দিলেও সিলেট বিএনপির বেশিরভাগ নেতারাই এখন গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে। বেশিরভাগ নেতারাই নিজেদের মোবাইল ফোনও বন্ধ করে রেখেছেন। ফলে টানা অবরোধ কর্মসূচী ও হরতাল ডাকলেও মাঠে দেখা মিলছে না জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের। নিজেরা মাঠে না থাকলেও ভাড়াটে কর্মী দিয়ে চালাচ্ছেন বিভিন্ন স্থানে নাশকতা, জ্বালাও-পুড়াও বলে অভিযোগ।

৫ জানুয়ারি সমাবেশ করতে না পেরে টানা অবরোধ ডাকেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সারা দেশের নেতাকর্মীদের মাঠে নেমে আসারও আহ্বান জানান বিএনপি নেত্রী। তবে নেত্রীর আহ্বানে মাঠে নামার বদলে উল্টো অজ্ঞাতবাসে চলে গেছেন সিলেট বিএনপির নেতারা। গ্রেফতার এড়াতে রাজপথমুখো হচ্ছেন না তারা। নিজের মোবাইল ফোন পাল্টিয়ে ঘনিষ্টজনদের সাথে যোগাযোগ করে জেনে নিচ্ছেন দেশের সর্বশেষ খবর।

জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারনেই রাজপথে নামার সাহস দেখাচ্ছেন না বিএনপি নেতারা। বিএনপি নেত্রীর অবরোধ আহ্বানের পর থেকেই সিলেটের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে পুলিশ। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনায় প্রতিদিনই বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। এ অবস্থায় মাঠে নামার সাহস দেখাচ্ছেন শীর্ষ নেতারা। 

সর্বশেষ সোমবার (১২ জানুয়ারি) শশুরবাড়ি থেকে সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব বদরুজ্জামান সেলিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরআগে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহারিয়ার হোসেন চৌধুরীকেও গ্রেফতার করা হয়। এমন সময় সিলেটে বিএনপির একমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও ভিন্ন একটি মামলায় কারান্তরীন। ফলে সিলেটে চরম বিপাকে পড়েছে বিএনপি। সংবাদকর্মরা ফোন করেও খোঁজে পাচ্ছেন না বিএনপি নেতাদের। মাঠে নেতারা না নামায় কর্মীদেরও দেখা মিলছে না। আন্দোলন ডেকে নেতাদের এই পলায়ণপরতা জনগনের কাছে ভুল বার্তা দেবে বলে মনে করছেন অনেকে।

বিএনপির রাজনীতির সাথে সংশ্লিস্ট অনেকের মতে, ভুল লোকদের দিয়ে কমিটি গঠন, ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে সুবিধাভোগীদের পদপদবি প্রদানের কারনে আজ সিলেট বিএনপির এই দৈনদশা। একজন নেতকেও মাঠে পাওয়া যায়। এদের কারনে আন্দোলনে জনগন সম্পৃক্ত হচ্ছে না বলে মনে করেন এসব বিক্ষুব্ধ নেতারা। 

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব বদরুজ্জামান সেলিমের গ্রেফতার হওয়া নিয়েও বিরুপ মন্তব্য করেছেন অনেকে বিএনপি নেতা। আন্দোলনের হ্যাপা এড়িয়ে নিরাপদে থাকতে তিনি নিজ ইচ্ছায়ই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কয়েকজন পদবঞ্চিত নেতা।

এদিকে সিলেট জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে একমাত্র শামসুজ্জামান জামান ছাড়া আর কোন নেতাকে মাঠে দেখা যায় নি কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে। সাবেক জেলা সভাপতি আব্দুল হক দীর্ঘদিন ধরে দলের কোন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না। 

অবরোধ ঘোষণার পর পুলিশি অভিযানের কারণে মাঠে নেই এডভোকেট নুরুল হক, এডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব, এডভোকেট আব্দুল গফফার, দিলদার হোসেন সেলিম, আব্দুল কাহের শামীম, আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, নোমান মাহমুদ, হুমায়ুন কবীর শাহীন, আলী আহমেদ, আজমল বখত সাদেক, এমরান আহমদ চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরসহ কেউই। 

নেতাদের পলায়নপর অবস্থার প্রেক্ষিতে  তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মিদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে এবং এরকম পরিস্থিতিতে আন্দোলনের কোন ধরণের ভবিষ্যৎ দেখছেন না নেতাকর্মিদের কেউই। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত