নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ নভেম্বর, ২০১৭ ১৮:৫৯

‘গর্ভবতী মায়ের অপুষ্টি ডায়াবেটিস রোগের অন্যতম কারণ’

‘সকল রোগের জননী’ খ্যাত ডায়াবেটিস নীরব মহামারী ব্যাধিতে বাংলাদেশে ৬% লোক এ যাবৎ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।  ধনী-গরিব নির্বিশেষে এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে শুধু ডায়াবেটিসের কারণেই দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে। খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পদ্ধতির উন্নয়ন এবং শারীরিক পরিশ্রম বাড়ানোর মাধ্যমে শতকরা ৬৫-৭০ ভাগ ক্ষেত্রে ‘টাইপ-২’ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ জন্য দরকার সচেতনতা। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে শুধু নিজে সচেতন হলেই চলবে না, অন্যকেও সচেতন করতে হবে। ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা না বাড়ালে এ রোগের কারণে কিডনি, চোখ, হৃৎপিন্ড এবং পা সহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হতে পারে।

মঙ্গলবার বেলা ১২টায় সিলেট ডায়াবেটিক সমিতি’র সভাক্ষে সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ লোলিত মোহন নাথ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ডায়াবেটিক দিবসের আলোচনায় সভায় সভাপতির বক্তব্য প্রদানকালে অধ্যাপক ডা. এম. এ. রকিব এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন,  গর্ভবতী মায়েদের জন্য ডায়াবেটিক খুবই ঝুকিপূর্ন। গর্ভবতী মায়ের অপুষ্টিই ডায়াবেটিস রোগের অন্যতম কারণ, তাই গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিকর খবার খাওয়া উচিত। তিনি গর্ভবতী মাদেরকে নিয়মিত গাভীর দুধ খাওয়া ও হাটাচলা করার উপদেশ দেশ।  তিনি আরোও বলেন, এখন ডায়াবেটিস রোগ নিরাময়ে সিঙ্গাপুর যেতে হয় না, সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালের অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করে এবং বিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শে খাদ্যাভাস করতে পারলে ডায়াবেটিক রোগ কে নিয়ন্ত্রণ করে আজীবন সুস্থ থাকা সম্ভব।  

সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমদ বলেন, ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ ও মোকাবেলায় আমাদেরকে সজাগ হতে হবে এবং আগামী প্রজন্মকে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। যেহেতু দেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী তাই ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। গর্ভকালীন মা যদি অপুষ্টিতে ভোগে তাহলে জন্মগ্রহণকৃত শিশুও অপুষ্ঠিতে ভোগবে তাই গর্ভবতী মায়েদের প্রতি যতœবান হওয়ার প্রতি জোর দিয়ে তিনি বলেন বিশ্বে প্রতিদিন এক হাজার মহিলা মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র গর্ভকালীন মায়েদের প্রতি অবহেলা ও অসচেতনাতামূলক কর্মকান্ডের কারণে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি কর্তৃক প্রেরিত সকল গর্ভধারন হোক পরিকল্পিত স্লোগান সম্বলিত লিফলেট যদি সাধারন ডায়াবেটিক রোগীরা বার বার পড়েন এবং তা অনুসরণ করেন তাহলেই সকল গর্ভকালীন ডায়াবেটিক রোগীরা ডায়াবেটিক এর হাত থেকে রক্ষা পাবেন এবং আমাদের এ আয়োজন সফল ও স্বার্থক হবে ।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমিতির সহ-সভাপতি সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আ.ফ.ম. কামাল এডভোকেট, কার্যকরি কমিটির সদস্য ইকবাল আহমদ চৌধুরী এডভোকেট, সাংবাদিক আফতাব চৌধুরী, সৈয়দ সুজাত আলী, জীবন সদস্য আলাউদ্দিন আহমদ মুক্তা, অরুপ শ্যাম বাপ্পী,  সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ এ.জেড. মাহবুব আহমদ প্রমূখ। বক্তারা ডায়াবেটিস রোগ ও এর প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

ডায়াবেটিক দিবসের কর্মসূচী হিসেবে সকাল ১০ টায় হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ.জেড. মাহবুব আহমদ নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের হয়ে শহরের অন্যতম সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে শেষ হয়।

এছাড়াও সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত হাসপাতালে আগত রোগীদের বিনামূল্যে ডায়াবেটিক সনাক্তকরণ করা হয়।       

আপনার মন্তব্য

আলোচিত