নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৭:৪৯

উদ্যোক্তা পরিচালকরাই ফারমার্স ব্যাংকে লুটপাট করেছেন: সিলেটে অর্থমন্ত্রী

নানা অনিয়মের কারণে সমালোচনায় থাকা ফারমার্স বন্ধ হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেন, যারা এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই উদ্যোক্তা পরিচালকরাই লুটপাট করে ব্যাংকটি শেষ করে দিয়েছেন। তবে বাংলাদেশে কোনো ব্যাংকের পতন হয় না। হতে দেওয়া হয় না।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের ইসলামপুরে বাংলাদেশ ডেভোলাপমেন্ট ব্যাংক কর্পোরেশন (বিডিবিএল)-এর ৩৭তম শাখার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

ব্যাংকে গিয়ে গ্রাহকরা আমানত পাচ্ছেন না বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি তদারকি করছে। তারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রশাসক নিয়োগের ব্যাপারেও তারা সিদ্ধান্ত নেবে।

এরআগে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুর আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্যাংকটির পরিচালক মোস্তাক আহমদ, আবু হানিফ খান, ড. একেএম ওবায়দুর রব, এসপার হোসেন পিয়ার প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দেওয়া ফারমার্স ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর পরই অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। আস্থার সংকট তৈরি হলে আমানতকারীদের অর্থ তোলার চাপ বাড়ে। পরিস্থিতির অবনতি হলে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে বাধ্য হন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতী। পরিচালক পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তাঁরা। এরপর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম শামীমকেও অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মোট ৩৯ জন ব্যক্তি উদ্যোক্তা ও ১২টি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগে ৪০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে ২০১৩ সালে যাত্রা করে নতুন প্রজন্মের বেসরকারি ফারমার্স ব্যাংক। ব্যাংকের মোট ৪০ কোটি ১৬ লাখ ১০ হাজার শেয়ারের মধ্যে ৩৯ জন ব্যক্তি উদ্যোক্তার শেয়ার ২৯ কোটি ৩৬ লাখ ১০ হাজার। প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা হিসেবে ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ রয়েছে ২৯৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা, যা ব্যাংকটির মোট শেয়ারের ৭৩ দশমিক ১১ শতাংশ। বাকি ১২ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মূলধন ১০৮ কোটি টাকা।

ব্যাংকটির প্রভাবশালী উদ্যোক্তাদের মধ্যে আছেন— সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ডের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. মাহবুবুল হক বাবুল চিশতী, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মেয়ে নাফিসা কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুনতাসীর উদ্দিন খান মামুন (মুনতাসীর মামুন), লুসাকা গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সরকার, মোহাম্মদ মাসুদ, আজমত রহমান, ড. মোহা. আতাহার উদ্দিন ও অমিকন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী মো. মেহেদী হাসান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত