নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ এপ্রিল, ২০১৮ ১৪:০১

নগরীর সেফওয়ে হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ দুই প্রসূতির মৃত্যু

সিলেটে নগরীর মির্জাজাঙ্গাল এলাকার ডিএমটি সেফওয়ে হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় দুইজন প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ৭টা ও সাড়ে ৭টায় পৃথক ভাবে এ ঘটনা দু’টি ঘটে বলে জানা যায়।

নিহত দুই প্রসূতিরা হলেন, সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের কল্লগ্রামের শাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী আসমা বেগম (২৪) ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের চুনাহাটি গ্রামের রুবেল আহমদের স্ত্রী ফয়জুন্নাহার চৈতি (২২)।

নিহত ফয়জুন নাহারের স্বামী রুবেল আহমদ অভিযোগ করে বলেন, রাতে ডা. মিনতি সিনহা আমার স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করেন। তার একটি পুত্র সন্তান হয়। সকাল ৭টার দিকে তার স্ত্রীর অবস্থা খারাপ হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আশরাফ এসে ইনজেকশন পুষ করার পর রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক আইসিইউ সাপোর্টে নেওয়ার কথা বলেন। এরপর নগরীর রাগিব রাবেয়া হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেন, রোগী অনেক আগেই মারা গেছেন।

রোগী মারা যাওয়ার পর বিল না রেখেই রোগী বিদায় করে দেওয়ার চেষ্টা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, এমন অভিযোগও করেন তিনি।

অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক ডা. মিনতি সিনহা বলেন, দুই রোগীকে রাতে অপারেশন করে রেখে যান। রোগীর অবস্থার অবনতি হলেও কেউ তাকে জানায়নি। তার মতে, রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ার পর হয়তো কোনো ভুল ইনজেকশন পুষ করা হতে পারে। চিকিৎসার গাফিলতি থাকলে ময়না তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে নিহত আসমা বেগমের ভাই কাইয়ুম আল রনি বলেন, বোনের প্রসব বেদনা ওঠার আগেই রাতে ডা. মিনতি সিনহা অস্ত্রোপচার করেন। সিজারে একটি কন্যা সন্তান হয়। এরপরই একজন নবীন চিকিৎসকের তত্বাবধানে আমার বোনকে রেখে যান ওই চিকিৎসক। সকালে রোগীর অবস্থা স্বাভাবিক থাকলেও একটি ইনজেকশন দেওয়ার পর তার বোন মারা যায়।

ভুল চিকিৎসায় তার বোন মারা গেছেন বলেই বারবার দাবি করছেন কাইয়ুম।

এদিকে মৃত দুই প্রসূতির স্বজনরা বলছেন, রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ার পর চিকিৎসকদের খোঁজ মেলেনি। তারা হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান। এমনকি কথা বলার মতো হাসপাতালের কোন কর্তৃপক্ষকেও পাওয়া যাচ্ছে না।

সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন বলেন, খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কারো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

এদিকে ঘটনার খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এমনকি ডিএমটি সেফওয়ে হাসপাতালের পরিচালক লিয়াকত হোসেনের মোবাইল নম্বরে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত