হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

২০ এপ্রিল, ২০১৮ ২২:৩৮

সুবিধাবঞ্চিতদের সাহায্যার্থে ‘মোমেন্টস্’ এর ব্যতিক্রমী আয়োজন

বৈশাখের আনন্দের সাথে সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের সহযোগিতার লক্ষ্যে হবিগঞ্জের অন্যতম ফটোগ্রাফি ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘মোমেন্টস্’ আয়োজন করেছে বৈশাখী ফটোশুট।

১লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে এই চ্যারিটি ফটোশুট কার্যক্রম। আগামী ১১ বৈশাখ (২৪ এপ্রিল) পর্যন্ত চলবে এ ফটোশুট কার্যক্রম। ফটোশুটের জন্য কোন নিদিষ্ট ফি রাখা হয়নি। ছবি তুলে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা দিয়ে সহযোগিতা করছেন সবাই।

‘মোমেন্টস্’ এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আশিস দাস বলেন, বাংলা বছরের শুরুটা একটা ভাল কিছু দিয়েই হোক। শুভ দিনে সকলের সাথে সম্মিলিত ভাবে একটি ভাল কাজের মাধ্যমে কারো উপকার করাই আমাদের লক্ষ্য।

চ্যারিটি ফটোশুট সম্পর্কে তিনি বলেন, গত ১৪২৪ বৈশাখ থেকে আমরা এই চ্যারিটি ফটোশুট কার্যক্রম শুরু করেছি। সে বছর চ্যারিটি ফটোশুটের টাকা দেয়া হয়েছিল হতদরিদ্র ২ অন্ধ ভাই বিশ্বজিৎ ও বিদুরকে।

এরই ধারাবাহিকতায় এবার ও আমরা এই চ্যারিটি ফটোশুট কার্যক্রম চলমান রেখেছি। এবারের চ্যারিটি ফটোশুটের টাকা দেয়া হবে সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরন করা বংশীবাদক ফুলবর মিয়া কে।

তিনি জানান, ফুলবর মিয়া বিয়ে বাড়ি, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ও মঞ্চ নাটকে বাঁশি বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। টানা ১৫ বছর জীবন সংকেত নাট্য গোষ্ঠীর হয়ে মঞ্চনাটকে বাঁশি বাজিয়ে বিমোহিত করেছেন দর্শক স্রোতাকে। তার বাঁশির সুর দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে পৌঁছানোর জন্য পাসপোর্ট ভিসাও রেডি ছিল, কিন্তু রওয়ানা হওয়ার ঠিক আগের দিন গত ১৩ ডিসেম্বর ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরন করেন ফুলবর মিয়া । তাই এবারের আয়োজন টা হবে ফুলভাইয়ের জন্য। ফটোশুট শেষ হলেই ফুলভাইয়ের কাছে টাকা হস্তান্তর করা হবে।

বৈশাখী চ্যারিটি ফটোশুটে সকলের অংশগ্রহণ নিয়ে আশিস দাস বলেন, সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা বিমোহিত। স্কুল পড়ুয়া ছোটভাইয়েরা যখন ছবি উঠিয়ে ১০ টাকা ২০ টাকা খুব লজ্জামুখে হাতে গুজে দেয়, পাশের ক্ষুদ্র দোকানি যখন এসে বলে ভাই আমার তো সামর্থ্য নাই তবে সাথে থাকতে চাই, আমার এই ৫০টাকা কি রাখবেন? এই অনুভূতিগুলো আসলে ভাষায় প্রকাশের না। সবকিছু টাকার অঙ্কেও প্রকাশিত হয় না।

তিনি বলেন, হঠাৎ এক অপরিচিতা এসে কন্ট্রিবিউট করে গেলেন কিন্তু কোন ছবি উঠাতে চাইলেন না। এই আস্থা আর সম্মানের জায়গাটা মাঝেমধ্যে অশুশিক্ত করে দেয়। আরও দশটা ভাল কাজের অনুপ্রেরণা দেয়। শুধু ফটোশুট করে নয় আড়ালে থেকেও অনেক স্বজনরা অংশগ্রহণ করেছেন। সেসব শুভাকাঙ্ক্ষীদের জন্য ধন্যবাদ বা কৃতজ্ঞতা যথেষ্ট নয়। নিরন্তন ভালবাসা তাদের জন্য।

এই চ্যারিটি ফটোশুটের জন্য ‘মোমেন্টস্’ স্টুডিওতে দেয়ালচিত্র করেছেন চিত্রশিল্পী আশিষ আচার্য। ছবি তুলেছেন আশিস দাস ও রাসেল আহমেদ । স্টুডিও সাজসজ্জায় ছিলেন মাইকেল জুয়েল, সুমন সরকার শ্রাবণ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত