মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

২২ এপ্রিল, ২০১৮ ১৫:২২

দেড় যুগ পর ছাত্রলীগের সম্মেলনকে ঘিরে উচ্ছ্বাস মৌলভীবাজারে

দেড় যুগ ধরে পরিচয়বঞ্চিত মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী। কমিটির পর কমিটি হয় কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি গত ২০ বছরেও। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে মৌলভীবাজার ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। দেড় যুগ পর চলতি এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনকে ঘিরে উচ্ছ্বাসিত মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগ। চলছে নিজ নিজ বলয়ে পদ প্রত্যাশীদের তদবির।

শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি এই স্লোগানকে বুকে ধারণ করে ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। সময়ের পরিবর্তে ইতিহাস ঐতিহ্যকে হারিয়ে ফেলছে ছাত্রলীগ।

১৯৯৮ সালে থেকে আজ অব্দি দেড় যুগে কেন্দ্রঘোষিত মোট তিন কমিটি গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটির মুখ দেখেনি মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগ। সময়ের সাথে সাথে পরিচয়বিহীর হাজারো রাজপথের কর্মীবাহিনী হারিয়ে গেছে কালের পরিক্রমায়। মৌলভীবাজার ছাত্রলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ১৯৯৮ সালে।

২০১৫ সালের ১৯ জুলাই কেন্দ্র থেকে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নাম প্রকাশ করেন। জেলা সভাপতির দায়িত্ব পান আসাদুজ্জামান রনি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সাইফুর রহমান রনি। এই দুই রনিও তাদের মেয়াদে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেন নি। এই তিনটি কমিটি দেয়া হয়েছে সম্মেলনবিহীন। কেন্দ্র থেকে সরাসরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাঠিয়ে কমিটি গঠন করা হয়।

সম্মেলনের আশায় বারবার ভেঙ্গে গেছে মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতা কর্মীর হৃদয়। ২০ বছর ধরে সম্মেলন ছাড়াই সভাপতি-সম্পাদক নির্বাচিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে বারবার ব্যর্থ হয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরই মধ্যে চলতি মাসের ২৩ তারিখ মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

নিজেদের পরিচয় পাবার আশায় এবং ২০ বছর পর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করায় জেলার নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। কমিটিতে পদ পেতে জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে জেলা ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রক জেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার বলয়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। একই সঙ্গে তারা কেন্দ্রে যোগাযোগ রক্ষায় সরব রয়েছেন।

সম্মেলন ঘিরে ৪ বলয়ে বিভক্ত জেলা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীরা নিজ নিজ বলয়ের মাধ্যমে চেষ্টা তদবির করে যাচ্ছেন, চেষ্টা করে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধির। পদ প্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের মুখে যাদের নাম আলোচনায় আছে। তারা হলেন মো. রাসেল আহমদ, জাকির হোসেন সুজল, আমিরুল হোসাইন চৌধুরী, ফয়সল মনসুর, সাইদুর রহমান মনি, মাহের হোসেন জাকের, তানভীর আহমদ তনয়, ইফতেখার হোসেন চৌধুরী ইমন, তানভীর সিপু প্রমুখ।

অন্যদিকে আসন্ন সম্মেলনে কেমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করেন এমন প্রশ্ন করা হলে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, যারা নেতৃত্বের যোগ্যতায় এগিয়ে আছেন, দু:সময়ে মাঠে থেকে লড়াই করেছেন, নিয়মিত ছাত্র, আন্দোলনে সামনের কাতারে ছিলেন, মনে প্রাণে জাতীর পিতার আদর্শ লালন করেন এবং নিজের থেকে দলকে বড় মনে করেন তেমন কর্মীবান্ধব নেতাকে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটিতে দেখতে চান। সেই সাথে বিতর্কিতরা যেন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে না পারে সে বিষয়ে তাগিদ রয়েছে সাধারণ কর্মীদের।

সভাপতি পদ প্রত্যাশী মো. রাসেল আহমদ জানান, পদের জন্য রাজনীতি করি না তবে বুকের মধ্যে যেহেতু জাতির পিতার আদর্শ লালন করি তাই সংগঠনে ভালোবেসে দায়িত্ব নিতে চাই। বিতর্কমুক্ত থেকে সাধারণ ছাত্রদের অধিকার এবং জাতীর পিতার আদর্শের বাস্তবায়নে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে চাই।

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আসাদুজ্জামান রনি বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে জেলা ছাত্রলীগের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ২৩ তারিখের এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালনকারী ত্যাগী ও নিবেদিত প্রান নেতৃত্ব আসবে সেটাই লক্ষ্য।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত