মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

১৪ মে, ২০১৮ ০১:২৬

রাগীব আলীর দখলে থাকা আরেকটি চা বাগান উদ্ধার

এবার মৌলভীবাজারে বিতর্কিত শিল্পপতি রাগীব আলীর দখলে থাকা একটি চা বাগান উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার মৌলভীবাজারের রাজনগরের কাশিপুর চা বাগানে রাগীব আলীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ চা বোর্ড।

আদালতের রায়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের ত্বত্তাবধানে শনিবার এ বাগানটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর বাগানটি দেখভাল করার জন্য চা বোর্ড তাদের ব্যবস্থাপক নিয়োগ করে।

এরআগে ২৫ বছর অবৈধ দখলে রাখার পর আদালতের রায়ে ২০১৬ সালের ১৫ মে সিলেটের তারাপুর চা বাগান রাগীব আলীর দখলমুক্ত করে প্রশাসন। রাগীব আলীকে উচ্ছেদ করে সেবায়েত পঙ্কজ গুপ্তকে তারাপুর চা বাগান বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

রোববার (১৩ মে) দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জিত কুমার চন্দ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায়  রাজনগরের কাশিপুর চা বাগানের বর্তমান দখলদারকে উচ্ছেদ করে বাংলাদেশ চা বোর্ডকে দখল বুঝিয়ে দেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রাগীব আলীর মালিকানাধীন রাজনগর উপজেলার রাজনগর চা বাগান রয়েছে। ওই বাগানের পার্শ্ববর্তী ১৩৯.৪৩ একর আয়তনের কাশিপুর চা বাগান দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে দখলে রেখেছিলেন তিনি। অবৈধ দখল উচ্ছেদের জন্য প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে। এর প্রেক্ষিতে রাগীব আলী মৌলভীবাজার সহকারী জজ আদালতে ২০১১ সালে স্বত্ত মামলা (৯৩/২০১১) করেন। দীর্ঘদিন পর গত ৩০ এপ্রিল রাগীব আলীর আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।

আদালতের রায়ের কপি পাওয়ার পর জেলা প্রশাসক বাগানের দখল উচ্ছেদ ও চা বোর্ডকে বাগান বুঝিয়ে দেয়ার জন্য ৬২০ নং স্মারকে সঞ্জিত কুমার চন্দকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট নিয়োগ করেন। ওই পত্রের প্রেক্ষিতে রোববার দুপুরে নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট সঞ্জিত কুমার চন্দ পুলিশ, ডিবি পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বিশাল একটি দল সাথে নিয়ে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে চা বোর্ডকে বাগানের দখল বুঝিয়ে দেন।

উচ্ছেদ কার্যক্রম চলার সময় চা বোর্ডের সচিব নূরুল্লাহ নূরী, রাজনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাখী আহমদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম, রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিকসহ চা বোর্ড, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে উচ্ছেদ কার্যক্রম চলাকালে বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিকালে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আল মুস্তাহিদুর রহমান পিএসসি কাশিপুর চা বাগানে এসে শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, এখানে যারা বাগানের শ্রমিক আছে, সবাইকে নিয়েই এ বাগানের উন্নয়ন করা হবে। নির্ধারিত মজুরির পাশাপাশি শ্রমিকদের সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।

কোনো প্রকার গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে আগের মতো কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এসময় বাগানের শ্রমিকদের দাবির কথা শুনে এক সপ্তাহের মধ্যে ডাক্তার নিয়োগের আশ্বাস দেন তিনি।

বাংলাদেশ চা বোর্ডর সচিব নূরুল্লাহ নূরী জানান, সরকারের পক্ষে আদালতের রায় পাওয়ায় জেলা প্রশাসন কাশিপুর চা বাগানের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে চা বোর্ডকে বাগান বুঝিয়ে দিয়েছেন। শ্রমিকদের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করবে চা বোর্ড।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত