দিরাই প্রতিনিধি

১৫ মে, ২০১৮ ০০:২৮

দিরাইয়ে মুক্তিযোদ্ধার সম্পর্কে অপপ্রচারের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

দিরাই উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আতাউর রহমান ও অষ্ট্রিয়া প্রবাসী বিএনপি নেতা মাইদুল মিয়ার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের প্লাটুন কমান্ডার প্রয়াত আব্দুল মান্নান সম্পর্কে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার বিকেলে এমন অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে দিরাই উপজেলা আব্দুল মান্নান স্মৃতি পরিষদ।

দিরাই হাসপাতাল রোডের দিরাই অনলাইন প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংসদের উপজেলা কমিটির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সর্দার।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, প্রয়াত আব্দুল মান্নান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন, তার ছেলে যুক্তরাজ্য মিডল্যান্ড যুবলীগ সভাপতি জুবের আলম খুরশেদ বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে ২০০০ সালে সর্বপ্রথম যুক্তরাজ্যে আব্দুল মান্নান স্মৃতি পরিষদ গঠন করেন। ২০০৯ সালে দিরাই উপজেলা কমিটি এবং এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কমিটি গঠন করা হয়। এ সকল কমিটির মাধ্যমে আমরা দিরাইয়ের শিক্ষা, সাহিত্য, কৃষির উন্নয়নসহ অসহায় মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। গতবছর আমরা দিরাইয়ের ফসল হারা মানুষকে এ সংসদের উদ্যোগে বীজ, চাল ও নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছি, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দিরাই-শাল্লার সংসদ সদস্য ড. জয়াসেন গুপ্ত। এর আগের বছর এ সংসদের উদ্যোগে জগদল আল ফারুক উচ্চ বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে , গরীব এতিমদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রয়াত সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

তিনি বলেন, আমরা কারো কাছ থেকে কোনো দিন অর্থ সাহায্য গ্রহন করিনি, জুবের আলম নিজের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে বাবার স্মৃতি ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। তার নিজ গ্রাম রায়বঙ্গালী গ্রামের সাতির মিয়া, আইয়ুব আলী সহ এলাকার অনেকেই আব্দুল মান্নান সাহেব প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন সে কথা স্বীকার করেছেন, সাবেক কমান্ডার আতাউর রহমান জুবের আলমের কাছ থেকে ফায়দা হাসিলে ব্যর্থ হয়ে নিজের দুর্নীতি ঢাকতে একজন মুক্তিযুদ্ধা সম্পর্কে এসব মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তিনি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় না দিয়ে স্বার্থন্বেষী মহলের মাধ্যমে ফেসবুকে দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন,আমরা এর নিন্দা জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ৬-৭ বছর আগে আতাউর রহমান সাহেবের কিছুই ছিল না হঠাৎ কিভাবে সেন মার্কেটে বিশাল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসহ সিলেটে বাসাবাড়ির মালিক হলেন দিরাইবাসী তা জানতে চায়।

তিনি আরো বলেন, অস্ট্রিয়া প্রবাসী মাইদুল মিয়ার বাবা আজীবন সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের হাত ধরে রাজনীতি করেছেন আর মাইদুল মিয়া হঠাৎ বিএনপি সেজে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটুক্তি ও আওয়ামীলীগ সম্পর্কে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য কোনো তালিকায় নাম থাকার প্রয়োজন নেই উল্লেখকরে তিনি বলেন, আমাদের এলাকার স্বনামধন্য মুক্তিযুদ্ধা সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুজাত আহমদ চৌধুরীর তো মুক্তিযুদ্ধা তালিকায় নাম নেই। আব্দুল মান্নান সাহেব মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম তুলে তথাকতিথ মুক্তিযোদ্ধা সেজে ফায়দা হাসিল করতে চাননি। তিনি মুক্তিযুদ্ধ শেষ হতেই মারা যান।

 সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংসদের সাধারণ সম্পাদ শাহিন মিয়া, সহসাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন মুফতি, সহপ্রচার সম্পাদক সালমান আহমদ, তাড়ল ইউনিয়ন সভাপতি মোহাম্মদ আলী,রাজানগর ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি আজহারুল ইসলাম, ভাটিপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জগদল ইউনিয়ন কমিটির আহবায়ক নিজাম মিয়া প্রমুখ।

সংসদের প্রতিষ্টাতা প্রধান পৃষ্ঠপোষক জুবের আলম খুরশেদ বলেন, ছোট বেলা বাবা হারাই,আমার কষ্টার্জিত অর্থদিয়ে বারার স্মৃতি ধরে রাখতে সর্বপ্রথম যুক্তরাজ্যে আব্দুল মান্নান স্মৃতি সংসদ গঠন করি।এরই ধারাবাহিকতায় আমার জন্মস্থান দিরাই উপজেলায় ও বিভিন্ন ইউনিয়নে কমিটি গঠন করি। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন। আতাউর রহমান সাহেবের মতো একজন উপজেলার সাবেক কমান্ডার আমার বাবা সম্পর্কে ফেসবুকে অপপ্রচার চালানো সত্যই দুঃখজনক। বাবা যুদ্ধ করেছেন দেশের জন্য,মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম তুলার মন মানসিকতা বাবার ছিল না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত