সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

২৪ জুন, ২০১৫ ১৬:৩৪

টেংরাটিলা ট্র্যাজিডির এক দশক

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ডের ২য় দফা অগ্নিকান্ডের এক দশক পূর্ণ হল আজ। এখনো আশপাশের জমিতে মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস উদগীরন হচ্ছে। নরম মাটি, পুকুর, খাল, বিলঝিল, বসতঘর, টিউবওয়েল, রাস্তা ঘাটে বুদবুদ আকারে বের হচ্ছে। গ্যাসের উদগীরনের কারনে আতঙ্কের পাশাপাশি পরিবেশ গত মারাত্বক হুমকিতে রয়েছেন এলাকাবাসী।

তবে প্রশাসন বলছে এখনকার অবস্থা এটি স্বাভাবিক। এখান থেকে গ্যাস উত্তোলন করার আগে পর্যন্ত এখনকার গ্যাস উদগিরন স্বাভাবিক হচ্ছে না।

২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারী রাত ১০টায় টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ডে প্রথম দুর্ঘটনা ঘটেছিলো। আগুনের তাপে প্রডাকশন কুপের রিগ ভেঙ্গ আগুন ২০০ থেকে ৩০০ ফিট উপরে উঠেছিলো। এক মাসের বেশি সময় আগুন জ্বলার পর তা আপনাতেই নিভে ছিলো। একই বছর ২৪ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে আবারো দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে আগুন। গ্যাসফিল্ডের আশপাশের এলাকায় গ্যাস উদগীরণ শুরু হলে সর্বত্র বিস্ফোরণ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফসলি জমি, নরমমাটি, আশপাশের পুকুর, খাল, বিলঝিল, বসতঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, টিউবওয়েল, রাস্তা ঘাটে বুদবুদ আকারে বের হতে থাকে গ্যাস। বিভিন্ন সূত্রের মতে দু দফা অগ্নিকান্ডে গ্যাস ফিল্ডের ৩ বিসিক গ্যাস পুড়ে যায়। আর ৫.৮৯ থেকে কমপক্ষে ৫২ বিসিক গ্যাসেরর রিজার্ভ ধ্বংশ হয়। হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়।

টেংরা গ্রামের মতলিব মিয়া জানান, গত ১০বছরে এ এলাকায় দিনে দিনে গ্যাসের চাপ আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন ঘরের ভেতর ও রান্নারচুলা দিয়ে গ্যাস বের হতে থাকায় মারাতœক ঝুঁকির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন তারা। গ্যাসের চাপ বেড়ে যাওয়ায় নানা রোগেরও প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তবে গ্যাস ফিল্ডে নাইকোর শুধু মাত্র নিরাপত্তা প্রহরী ব্যতিত বর্তমানে বিশেষজ্ঞ কেউ নেই।

একই এলাকার আজিজুর রহমান বলেন, পুরো এলাকায় বুদ বুদ তীব্র আকার ধারণ করায় বর্তমানে খাবার পানিরও সংকট দেখা দিয়েছে। টেংরাটিলা সহ কয়েকটি গ্রামের টিউবওয়েলের পানিতে গ্যাসযুক্ত হয়ে খাবার অনুউপযোগী হয়ে পড়েছে। গ্যাসে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। বিভিন্ন পুকুর দিয়ে গ্যাস উগি¦রনের ফলে মাছ মারা যাচ্ছে নিয়মিতই। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে টেংরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, টেংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেংরাটিলা বাজারসহ অসংখ্য বাড়ীঘর। আশে পাশের বাড়ি ঘর সহ পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেই কোন ক্ষতিপূরন পাইনি।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, এখনকার অবস্থা এটি স্বাভাবিক। এখান থেকে গ্যাস উত্তোলন করার আগে পর্যন্ত এখনকার গ্যাস উগি¦রন স্বাভাবিক হচ্ছে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত