কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

১৬ মে, ২০১৮ ২০:৩৯

কমলগঞ্জে উপবন ট্রেনে ছিনতাই, ট্রেন থেকে পড়ে মা-মেয়ে আহত

ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেসের চলন্ত ট্রেন থেকে এক নারী যাত্রীর ব্যাগ ছিনতাই করে লাফিয়ে পালিয়ে যাওয়া ছিনতাইকারীকে ধরতে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে ছিনতাইর শিকার যাত্রী মা ও মেয়ে আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৬ মে) ভোর রাত সাড়ে ৩টায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশনের ডাইন হোম সিগন্যাল এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি ও শ্রীমঙ্গলস্থ রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোর রাত অনুমান সাড়ে ৩টায় ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রা বিরতি শেষে ধীরে ধীরে শমশেরনগর স্টেশন অতিক্রম করছিল। ট্রেনটি ধীরগতিতে থাকা অবস্থায় ডাউন হোম সিগন্যাল এলাকা অতিক্রমকালে এক ছিনতাইকারী ট্রেনের একটি বগীর নারীযাত্রী রাবেয়া বেগমের হাত ব্যাগ ছিনতাই করে দ্রুত চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে যায়। এসময় ছিনতাইকারীকে ধরতে ছিনতাইর শিকার ট্রেন যাত্রী রাবেয়া বেগমের মেয়ে হাসিনা বেগম ধীরগতির চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। তা দেখে তার মা রাবেয়া বেগমও চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। এতে করে নারী যাত্রী রাবেয়া বেগম (৫৫) ও তার মেয়ে হাসিনা বেগম (৩০) আহত হয়েছেন। তাদের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার মাঝগঞ্জ।
    
ঘটনার খবর পেয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী পুলিশের একটি দল নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় দুই নারী যাত্রীকে উদ্ধার করে একটি সিএনজি অটোরিক্সায় করে পুলিশি হেফাজতে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে আহত মা মেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান।

শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ বলেন, বুধবার ভোর রাত ৩টা ২৫ মিনিটে সিলেটগামী উপবন ট্রেন এখান থেকে সিলেটের দিকে যাত্রা শুরু করার ৫ মিনিটের মধ্যে হোম সিগন্যাল এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
    
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ট্রেন যাত্রী মা রাবেয়া বেগমের মাথায় ও মেয়ে হাসিনা বেগমের বাম পায়ে আঘাত লেগেছে। ঘটনার পর আইনী সহায়তা দিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করতে চাইলে আহত মা মেয়ে এখন কোন অভিযোগ দিতে চাননি। ভোর রাতের বৃষ্টির সময় ভিজে দুই নারী যাত্রী আহত হলে প্রাথমিকভাবে তাদের পরিধানে চাদর ও হাতে কোন টাকা না থাকায় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ত্যাগকালে পুলিশ ফাঁড়িকে তারা অবহিতও করেনি। তিনি আরও জানান, আহতরা জানিয়েছেন ছিনিয়ে নেওয়া হাত বেগে নগদ ১০ হাজার টাকাসহ কিছু স্বর্ণালঙ্কারও ছিল।
    
শ্রীমঙ্গলস্থ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় আহত মা মেয়ে কোন অভিযোগ দিতে রাজি হয়নি। তাদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ জানতে গেলে তারা অসংলগ্ন কথা বলে। এ ঘটনায় রেলওয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে জোর তদন্ত শুরু করেছে বলে তিনি জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত