কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

২৪ মে, ২০১৮ ১৮:০৪

শমশেরনগরে যত্রতত্র গাড়ির স্ট্যান্ড, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ জনপদ শমশেরনগর বাজারে রাস্তার উপর স্ট্যান্ড ও যত্রতত্র যানবাহন এবং এলোপাথাড়ি গাড়ি রাখায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। রাস্তার ভূমি দখল করে যানবাহন স্ট্যান্ড স্থাপন করায় জিম্মি হয়ে পড়েছেন যাত্রী সাধারণ। যানবাহন ক্রসিং, পথচারী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে পথচারী, শিক্ষক ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেছেন। জরুরী ভিত্তিতে শমশেরনগর বাজারে যানজট রোধে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগের দাবি এলাকাবাসীর।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে কমলগঞ্জের শমশেরনগর চৌমুহনা থেকে শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ-কুলাউড়া সড়কে ও শমশেরনগর রেলস্টেশন এলাকায় মৌলভীবাজার-মুন্সীবাজারগামী সিএনজি-অটোরিকশা স্ট্যান্ড ও সড়কের গাঁ ঘেঁষে গড়ে উঠছে নানা প্রতিষ্ঠান। এসব স্ট্যান্ডকে ঘিরে রাস্তা দখল করে ও দুপাশে যত্রতত্রভাবে রাখা হয়েছে সিএনজি-অটোরিকশা, ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান।

উপজেলার ব্যস্ততম শমশেরনগর চৌমুহনা দিয়ে সুজা মেমোরিয়াল কলেজ, বিএএফ শাহীন কলেজ, হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, এএটিএম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন স্কুল, আব্দুল মছব্বির একাডেমি ও কয়েকটি মাদ্রাসার হাজার হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত যাতায়াত করেন। স্থানীয় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল করার কারণে পুরো রাস্তা দখল হয়ে যাওয়ায় দুটি গাড়ি ক্রসিং করা সম্ভব হয় না। ফলে অধিকাংশ সময়েই দুর্ঘটনা ও যানজট দেখা দেয়। পাশাপাশি পথচারী ও শিক্ষার্থীদের রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটাচলাও বন্ধ হয়ে পড়ে। অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে সড়কের গাঁ ঘেঁষে প্রশাসনের নাকের ডগায় গড়ে উঠছে যানবাহনসমূহের অফিস ও স্ট্যান্ড।

শমশেরনগর বিএএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থী প্রীতি রানী নাথ, লিছা আক্তার, সুজা মেমোরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী নিলীমা সুলতানা, সালমা আক্তার, হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাপলা আক্তার, চামেলী আক্তার, বিএএফ শাহিন কলেজের নাফিসা সুলতানা, ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান, পথচারী রুমেল আহমদ, শিক্ষক বিপ্লব ভূষণ দাস বলেন, শমশেরনগর চৌমুহনা থেকে ভানুগাছ ও কুলাউড়ার সড়কের বাজার পর্যন্ত বিভিন্ন যানবাহনে দখলে রেখেছে। যত্রতত্র ও এলোপাথাড়ি এসব যানবাহনের কারণে রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে চলাও যায় না। যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, রাস্তার দুপাশ থেকে গাড়ি আসলে মরণের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের এই স্থানটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে গাড়ি আসলে দুপাশে দাঁড়ানোর মতো জায়গাও নেই। বিশেষ করে শমশেরনগর চৌমুহনা সংলগ্ন এয়ারপোর্ট রোডের অবস্থা আরো ভয়াবহ। এখানে সিএনজি অটোরিকশা যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকে। বাসাবাড়ির লোকজন পর্যন্ত বের হতে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল মালিক যানবাহন সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, যত্রতত্র যানবাহনের সমস্যায় বাজারে ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন না বলে প্রতিদিনই অভিযোগ আসে। শিক্ষার্থীদেরও সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে সিএনজি চালক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকদের বলা হয়েছে রাস্তা পরিস্কার ও পথচারীদের যাতায়াতে যাতে কোন বিঘ্ন না ঘটে।

তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে শীঘ্রই তাদের সাথে বসে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এরপরও কার্যকরী না হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগ বিষয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অরুপ রায় চৌধুরী বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে যানবাহন চালকদের বারবার বলা হয়েছে। তাছাড়া ব্যবসায়ী সমিতি ও স্থানীয় সচেতন মহলকেও যত্রতত্র স্ট্যান্ড ও যানবাহন বন্ধে সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছি। এছাড়া শমশেরনগর বাজারে যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, এ বিষয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের সাথে কথা হয়েছে। শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত