কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

২৬ মে, ২০১৮ ১৭:১৯

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রসূতির মৃত্যু, চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বাড়িতে প্রসব করানোর পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে সময়ক্ষেপণ করায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে নিহতের পরিবার অভিযোগ করছেন।

শনিবার (২৬ মে) সকাল সাড়ে ৮টায় আলীনগর ইউনিয়নের আলীনগর বস্তিতে প্রসব হলে সকাল ৯টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গৃহবধূর মৃত্যু ঘটে।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আলীনগর বস্তির মশ্বব আলীর স্ত্রী গৃহবধূ রিমা বেগম (৩০) এর প্রসব ব্যথা শুরু হলে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় তার বাড়িতেই প্রসব করানো হয়। বাড়িতে প্রসবের পর রিমার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে দ্রুত কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত উপসহকারী আক্রাম আলী রোগীর অবস্থা দেখে ফোন করে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাজেদুল কবিরকে আসার অনুরোধ জানান। তিনি সাথে সাথে রোগীর স্বজনদের বলেন, এ রোগীকে দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাজেদুল কবির এসে পরীক্ষা করে দেখেন রোগী (রিমা বেগম) মারা গেছেন। জানা যায় এর রিমা বেগমের আরো তিন সন্তান রয়েছে।

এ ঘটনার পর নিহত গৃহবধূ রিমা বেগমের ভাশুর আশ্বাফ আলী অভিযোগ করে বলেন, বাড়িতে প্রসব করানো হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর তার চিকিৎসা সেবা দিকে বিলম্বের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি শোনার পর কমলগঞ্জ থানার পুলিশের একটি দল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তদন্ত করে।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাজেদুল কবির বলেন, আসলে বাড়িতে প্রসব করানোর পর এ মায়ের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পর তাঁর চিকিৎসা সেবা শুরুর আগেই সে মারা যায়। এখানে কোন অবহেলা ছিল না। বাড়িতে নিরাপত্তাহীনভাবেই প্রসব করানো হলে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, এ ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। চিকিৎসার অবহেলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোক্তাদির হোসেন পিপিএম বলেন, ঘটনা মৌখিকভাবে শুনে পুলিশের একটি দল পাঠিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে গৃহবধূর প্রচুর রক্তক্ষরণে মৃত্যু ঘটে। রোগীর স্বজনরা তাঁর লাশ বাড়িতে নিয়ে গেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত