বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি

১৩ জুন, ২০১৮ ১৬:২৮

বিয়ানীবাজারে আন্ত:বিভাগীয় ছিনতাইকারী চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

আন্ত:বিভাগীয় ছিনতাইকারী চক্রের সেলিম বাহিনীর সেলিমসহ তাঁর আরো দুজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ। সিলেট বিভাগের প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলাগুলো থেকে রমজান মাসে ৩০ লাখ টাকারও বেশি ছিনতাই করেছে বলে স্বীকার করেন সেলিম। গ্রেপ্তারকৃত সেলিম বটলা সেলিম নামেও পরিচিত।

মঙ্গলবার (১২ জুন) তাদের গ্রেপ্তারের পর রাতে বিয়ানীবাজারে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং করেছেন বিয়ানীবাজার থানার ওসি শাহজালাল মুন্সি।

ওসি বলেন, আন্ত:বিভাগীয় ছিনতাইকারী বটলা সেলিম বাহিনী চলতি রমজান মাসে বিয়ানীবাজারসহ সিলেটের বিভিন্ন প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলাগুলো থেকে রমজান মাসে ৩০ লাখ টাকারও বেশি ছিনতাই করেছে বলে পুলিশের কাছে তারা স্বীকার করেছে।

ওসি শাহজালাল মুন্সি জানান, ১৭ মে বিয়ানীবাজার পৌর শহরের ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকা উত্তোলন করে সিএনজিযোগে বাড়ী যাওয়ার পথে এক মহিলার ২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থানায় মামলা হলে পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ছিনতাইকরীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। তাদের ৫ জনের গ্রুপ সর্বশেষ ছাতক উপজেলায় ছিনতাই করে। সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের বাড়ী সামনে থেকে তারা ৩ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে আসে।

পুলিশের কাছে ছিনতাইকারীরা আরও স্বীকার করেছে তারা একেক দিন প্রবাসী অধ্যুষিত একেক উপজেলাকে বাছাই করে অপারেশন করতো। বিভিন্ন ব্যাংককে টার্গেট করে তাদের মধ্যে একজন ব্যাংকে অবস্থান নিতো আর দেখতো কে কত টাকা উত্তোলন করছে। ছিনতাইকারীরা বেশির ভাগ নারীদের টার্গেট করে ছিনতাই করতো বলে পুলিশকে জানিয়েছে।

ওসি জানিয়েছেন, ছিনতাইকারীরা দামী মোটরসাইকেল ছিনতাইকাজে ব্যবহার করতো। অপারেশন সাকসেস হলে মোটর সাইকেলের ভাড়া বাবত ৫০ হাজার টাকা মোটরসাইকেলের মালিককে দেওয়া হতো। বাকী টাকা তারা ভাগ বাটোয়ারা করে নিতো।

ওসি মঙ্গলবার রাতে ৩ ছিনতাইকারীকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করেন। এ সময় তারা ছিনতাইয়ের ঘটনা স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য পুলিশকে প্রদান করে। এ সময় ছিনতাইকারী বটলা সেলিম ওসি শাহজালাল মুন্সিকে দেখে বলে স্যার আপনি এই থানায় আছেন জানলে এখানে ছিনতাই করতে আসতাম না।

ছিনতাইকারীদের দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে পলাতক ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের ধারণা এই চক্রের পলাতক ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে সিলেট অঞ্চলের ছিনতাইয়ের ঘটনা অনেকটা কমে যাবে।

সোমবার ও মঙ্গলবার তার নেতৃত্বে বিয়ানীবাজার থানার বেশির ভাগ পুলিশ সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালায়। আটক ছিনতাইকারী একেকজনের নামে বিভিন্ন থানায় ৮/১০টি করে মামলা রয়েছে বলে ওসি নিশ্চিত করেন। বুধবার আটক ৩ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুলাউড়া উপজেলার মৃত চুনু মিয়া পুত্র আন্ত:বিভাগীয় ছিনতাইকারী দলের সদস্য সেলিম আহমদ (৩০) উরফে বটলা সেলিম, গোলাপগঞ্জ উপজেলার চন্দনবাগ গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের পুত্র জাকির আহমদ (৩৫), জগন্নাথপুর থানার আব্দুস ছালামের পুত্র এনামুল হক (৩০)।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত