অরণ্য রণি

১৩ জুন, ২০১৮ ২০:১৪

ভিড় নন-ব্র্যান্ডশপেও, এবারও পছন্দের শীর্ষে মাহা

রমজান শেষ হতে চলছে।  ঘনিয়ে এসেছে ঈদ।   তবু শেষ হচ্ছে না ঈদের কেনাকাটা।   এখনো ফ্যাশন হাউস আর শপিংমলগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।  সিলেটের ক্রেতারা ব্র্যান্ডশপগুলোর পাশাপাশি বরাবরই নন ব্র্র্যান্ডের কাপড়েও আগ্রহী।   এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।   ভালো ব্যবসা করছে নন ব্র্যান্ডশপও।   

সিলেট নগরীর ফ্যাশন সচেতন তরুণীদের অন্যতম শীর্ষ পছন্দের ফ্যাশন হাউজ  'মাহা'।   যে কোনো উৎসবেই এই ফ্যাশন হাউসে ভিড় লেগে থাকে ক্রেতাদের। এবারের ঈদ মৌসুমও তার ব্যতিক্রম নয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় লেগে আছে নগরীর নয়াসড়কে অবস্থিত 'মাহা' ফ্যাশন হাউজে।

সিলেটের শিশু, তরুণীসহ সবার পছন্দের শীর্ষে এখন এই ফ্যাশন হাউজটি। কোনো ব্র্যান্ড না হয়েও একটি ফ্যাশন হাউজ কি করে ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ হতে পারে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ - 'মাহা'।  শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই পোশাক পাওয়া যাচ্ছে মাহায়।

শাড়ি, ড্রেস, বাচ্চাদের কাপড়, কসমেটিক্স, জুয়েলারি আইটেম আর পাঞ্জাবীর অপরূপ সমন্বয়ে সজ্জিত এই জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউজটি। কসমেটিক্স সামগ্রীও রয়েছে মাহায়। এর মধ্যে কানের দোল আর ব্রেসলেট বেশি বিক্রি হচ্ছে। বাচ্চাদেরও বিভিন্ন বাহারি রকমের পোশাক রয়েছে এখানে। আন্ডার গার্মেন্টস, আতর, পারফিউম ও বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী, বিভিন্ন ধরণের পারফিউম, পার্টস, শো-পিসও বিক্রি করেন তারা।

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মাসরেকা হক বলেন, এবারের ঈদে কাপড়ের দাম গতবারের থেকে একটু বেশি মনে হচ্ছে। তবে ভালো ও মানসম্পন্ন কাপড় পাওয়া যায় বলে মাহা এখন সিলেটের অন্যতম শীর্ষ ফ্যাশন হাউজ। মাহায় আরেকটি সুবিধা হলো সবধরনের কাপড় একসাথে কিনতে পারা যায়।

ফ্যাশন হাউজ মাহার বিক্রয়কর্মী শেখ মো. বাদশাহ জানান, এবার আমাদের বিক্রি ভালোই হচ্ছে। শাড়ির মধ্যে কাতান শাড়িই চলছে বেশি। ৩ হাজার থেকে শুরু ৩০ হাজার টাকার কাতান শাড়ি আমরা বিক্রি করছি। এছাড়া খাড্ডি কাতান, কাঞ্জিভরন, অপেরা, বেনারসি, পিউর সিল্ক ও শার্টেন কাতান শাড়ির চাহিদাও আছে। দেশি শাড়ির মধ্যে টাঙ্গাইল, জামদানি, হাফ সিল্ক, তন্তুজ উল্লেখযোগ্য।

টাঙ্গাইলের শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ৪ হাজার, জামদানি ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার, বেঙ্গালুরু কাতান ৩ হাজার ৫শত থেকে ৫ হাজার ও বিভিন্ন ধরণের কাজ করা শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকায়। রিয়েলস্টোনের শাড়ি ৪ হাজার ১৫ হাজার, জয়পুরি ৩ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ড্রেসের কালেকশনের মধ্যে গাউন, সারারা, কারারা, অরগাঞ্জা উল্লেখযোগ্য। তবে এর মধ্যে গাউন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর মূল্য ৪ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তাছাড়া আমাদের আনরেডি থ্রি-পিসের মধ্যে বিনয়, গঙ্গা, অমটেক্স ইত্যাদি ভালো যাচ্ছে। বিভিন্ন নকশাভেদে এদের মূল্য ২২শত থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত। কসমেটিক্স, জুয়েলারি, ছেলেদের পাঞ্জাবি, পাজামা, লুঙ্গি, বাচ্চাদের পোশাকও বিক্রি করে থাকি।

বাদশাহ বলেন, পাঞ্জাবির কালেকশনে মাহায় চলছে হিট ডিজাইন, পাঠানি, পাঞ্জাবি ও কাবুলি। বিভিন্ন নকশাভেদের এদের দাম পড়ে ১৫শত থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া রয়েছে পাজামা ও লুঙ্গি। আর টপসের মধ্যে বেশি চলে তেজো। জুয়েলারি আর কসমেটিক্সের চাহিদা বেশি থাকে রোজার শেষ দশকে।

বিশেষ করে তরুণীদের কাছে মাহা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। একাধিক তরুণীর সাথে কথা বলে জানা যায়, মাহা ছাড়া তাঁরা ঈদের কেনাকাটার কথা কল্পনাই করতে পারেন না। বিভিন্ন মার্কেট, শপিং মল, ফ্যাশন হাউজ ঘুরে শেষ পর্যন্ত মাহা থেকে করেন ঈদের কেনাকাটা। নয়াসড়কে অবস্থিত একটি ফ্যাশন হাউজে কাপড় কিনতে আসা জনৈক এক তরুণীকে আক্ষেপ করে বলতে শোনা যায়, 'মাহা ছাড়া ইউনিক ডিজাইন আর কালেকশন কারোরই নেই। চল চল মাহায় যাই।'

মাহা'র ব্যবস্থাপক আব্দুল কাদির জানান, আমাদের প্রত্যাশা থেকেও বেশি এবারের ঈদের বাজারে ক্রেতা সমাগম। ঈদের বিক্রি গতবারের চেয়ে অনেক ভালো হচ্ছে এবার। সকাল ১০টা থেকে খোলার সাথে সাথে ক্রেতা সমাগম হতে শুরু করে যা থাকে মধ্যরাত ২টা পর্যন্ত। চাঁদরাত পর্যন্ত ভালো বিক্রি হবে আশা করি।

ফ্যাশন হাউজ মাহা'র স্বত্বাধিকারী মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমাদের মাহায় বিক্রি ভালোই চলছে। গতবারের থেকে বেশি ক্রেতা সমাগম হচ্ছে। বিক্রিও বেড়েছে। বৃষ্টির মধ্যেও ক্রেতারা ভিড় করছেন। ঈদের আগের রাত পর্যন্ত আরও ভালো ব্যবসার প্রত্যাশা করছেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত