নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ জুন, ২০১৮ ১২:৪৭

আচমকা ঢাকামুখী সিলেটের রাজনীতি

সিলেট সিটি নির্বাচন

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী? বিএনপির প্রার্থীইবা কে হচ্ছেন- এইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে আরো অন্তত দুই থেকে তিনদিন অপেক্ষা করতে হবে সিলেটবাসীকে। ঢাকায় দুই দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে দলীয় ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার থেকে আওয়ামী লীগ ও বুধবার থেকে বিএনপি দলের হয়ে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে দুই দলের মনোনয়ন সংগ্রহ করা নেতাদের মনোনয়ন পত্র জমা দিতে হবে। এদের মধ্যে থেকেই কেন্দ্রের নেতারা চূড়ান্ত করবেন দলীয় প্রার্থী।

ফলে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতাদের পাশাপাশি দুই দলের শীর্ষ নেতাদের বেশিরভাগই এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে গ্রুপিং লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। ফলে হঠাৎ করেই ঢাকামুখী হয়ে পড়েছে সিলেটের নির্বাচনী রাজনীতি। তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও তাকিয়ে আছেন ঢাকার সিদ্ধান্তের দিকে। কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন- এই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তারা।

প্রধান দুই দলেই একাধিক নেতা মেয়র পদে প্রার্থী হতে আগ্রহী হওয়ার কারণে বিপাকে পড়েন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। ফলে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পাশাপাশি দুই দলের শীর্ষ নেতাদের ঢাকায় ডেকে নেওয়া হয়েছে। সবার সাথে আলোচনা করেই কেন্দ্রীয় নেতারা দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন বলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

বুধবারই সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু করে বিএনপি। মনোনয়নপত্র বিতরণের প্রথম দিনেই সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমসহ ১১ নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

বুধবার (২০ জুন) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এসময় সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর হাতে মনোনয়ন ফরম তুলে দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

এদিকে, মঙ্গলবার থেকে শুরু হয় আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিতরণ। বুধবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও ক্রীড়া সংগঠক মাহিউদ্দিন সেলিম।

এরআগে মঙ্গলবার মেয়র পদে প্রার্থী হতে ধানমন্ডি কার্যালয় থেকে দলীয় মনোনয়ন কিনেন দলটির মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদউদ্দিন আহমদ।

গত সোমবার মহানগর আওয়ামী লীগের  বর্ধিত সভায় মেয়র প্রার্থী হিসেবে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার, অধ্যাপক জাকির হোসেন এবং শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদের নাম কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়। এই পাঁচজনই দলই মনোনয়ন সংগ্রহ করবেন বলে জানা গেছে। এদের বাইরে মাহিউদ্দিন সেলিমও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।

মনোনয়ন সংগ্রহ করা নেতাদের মধ্য থেকে আগামী ২২ জুন একজন দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ।

এদিকে, বৃহস্পতিবার বিএনপিও সিলেট সিটি নির্বাচনের আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন পত্র বিক্রি শুরু করে। প্রথম দিনে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমের পক্ষে মনোনয়নপত্র তাদের সমর্থকরা সংগ্রহ করেন।

বুধবার (২০ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর সিসিক মেয়র বলেন, আমরা বলেছি- সিলেটবাসী ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। আমরাও প্রস্তুত আছি। নগরবাসীর উন্নয়নে জেলে থাকার পরও আমি তাদের প্রত্যাশা অনেকাংশে পূরণ করতে পেরেছি। আশা করছি আগামীতে সিলেটনগরীকে আধুনিক নগরীতে পরিণত করব।

আরিফুল হক চৌধুরী আরো বলেন, মানুষের রায় নিয়ে গত নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলাম। বাকি সময়ে প্রতিশ্রুত উন্নয়নকাজ শেষ করার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি দলীয় কাজেও সময় দিয়েছি। দল নিশ্চয়ই এসব বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবে।

সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, গত নির্বাচনে পরাজিত হলেও আমি সবসময় জনগনের পাশে থেকেছি। আশাকরছি, জনগণ এবার মূল্যায়ন করবে। নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করে সিলেট নগরবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার প্রদান করবে।

প্রসঙ্গত, আগামী ৩০ জুলাই সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত