দেবকল্যাণ ধর বাপন

১৫ জুলাই, ২০১৮ ১২:৫৭

ছাপাখানায় নির্বাচনী ব্যস্ততা

তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সিলেটে বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। নির্বাচন মানেই পোষ্টার-লিফলেটের ছড়াছড়ি। তাই প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা পোস্টার ছাপাতে ছুটছেন ছাপাখানায়। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিলেট নগরীর ছাপাখানার মালিক-কর্মচারীরা।

যে কোন নির্বাচনের আগেই ছাপাখানায় বাড়তি কাজের চাপ থাকে। এবার সিটি নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই সময় মতো পোস্টার ডেলিভারি দিতে রাত জেগে কাজ করছেন শ্রমিকেরা।

সরেজমিনে নগরীর প্রিন্টিং প্রেসগুলো ঘুরে দেখা যায়, ছাপাখানার কর্মীর পোস্টার-লিফলেট ছাপানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এদিকে বৃষ্টির মৌসুম থাকায় অতিরিক্ত কাজ হিসেবে ছাপাখানার কর্মীরা পোস্টার লেমিনেটিংয়ের কাজেও ব্যস্ত রয়েছেন।

কোন শ্রমিক প্রিন্টারের পেন্ট পরিষ্কার করছেন, আবার কোনো শ্রমিক মেশিনে নতুন পেন্ট বসিয়ে পোস্টার ছাপানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার অনেকে ছাপা পোস্টার বান্ডিল করছেন। এখন শ্রমিক মালিকদের যেন নাওয়া-খাওয়ারও সময় নেই। তাদের কর্মযজ্ঞ চলছে দিন-রাত।

সিলেটের ছাপাখানার মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় দলীয় প্রার্থীরা আগে থেকেই বেশির ভাগ প্রচারসামগ্রী প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। তারপরও অন্যান্যরা যে পরিমাণে কাজ দিচ্ছে তা শেষ করতেই রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে।

মুক্তিযোদ্ধা গলিতে অবস্থিত ঢাকা প্রিন্টিং প্রেসের স্বত্বাধিকারী আলিম মাহমুদ বলেন, তারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নির্বাচনী পোস্টার ছাপানোর কাজ করতে ব্যস্ত রয়েছেন। নির্বাচনের সময় অর্ডার বেশি থাকায় সময়মতো পোস্টার সরবরাহ করতে তারা অতিরিক্ত সময় কাজ করছেন।

তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এখন আগের মতো ছাপাখানায় কাজ নেই। শুধু নির্বাচনের সময়ই তাদের কর্মযজ্ঞ বেড়ে যায়। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তাদের কাজের চাপ থাকবে বলে তিনি মনে করছেন।

জিন্দাবাজারের মুক্তিযোদ্ধা গলির গ্রাফিক্স ওয়ার্ল্ড নামের আরেক ছাপাখানার স্বত্বাধিকারী মেহেদী কাবুল জানান, আমার এখানে বেশিরভাগ কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাঁদের কাছে পোস্টার ও লিফলেট বানাতে আসছেন। এগুলো তৈরি করতে দিন-রাত কাজ করছেন মুদ্রণ শ্রমিকেরা। কারখানায় ৩২ জন নিয়মিত শ্রমিকের পাশাপাশি বাড়তি শ্রমিক আনা হয়েছে। তারপরও অর্ডার শেষ করা যাচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, চার-পাঁচ দিন ধরে কাজের ব্যাপক চাপ বেড়েছে। রাতেও কারখানাতেই থাকছেন তাঁরা। আরও কয়েক দিন এ রকম চাপ থাকবে বলে মনে করেন তিনি।

নগরীর লামাবাজার পয়েন্ট সংলগ্ন উদয়ন অফসেট প্রিন্টিং প্রেসের স্বত্বাধিকারী ও সিলেট প্রিন্টিং প্রেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বেলাল বলেন, নির্বাচন এলেই প্রার্থীদের পোস্টার-লিফলেট ছাপানোর কাজ বেড়ে যায়। সেই সময়টাই এখন। তারা পোস্টার ছাপানোর অর্ডার ও ডেলিভারি দিতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন। দৈনিক ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা শ্রম দিতে হচ্ছে এ কাজের জন্য। এমনকি শুক্রবারেও বিশ্রাম নেয়ার উপায় নেই।

তিনি আরও জানান, সিলেট সিটি নির্বাচনে প্রার্থীরা নির্বাচনী বিধি ও প্রশাসনের নির্দেশ মেনে প্রার্থীদের পোস্টার ছাপাচ্ছেন তারা। কোনো প্রার্থীর রঙিন পোস্টার ছাপাচ্ছেন না। শুধু সাদাকালো পোস্টারই ছাপানো হচ্ছে।  যদিও তফশিল ঘোষণার পর থেকেই ঈদের শুভেচ্ছার নামে বিচ্ছিন্ন ভাবে অনেক প্রার্থীরাই লিফলেট ছাপিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত