হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

১৭ জুলাই, ২০১৮ ০১:৪৩

ভাইকে ফাঁসাতে নিজ সন্তানকে হত্যা

হবিগঞ্জের বাহুবলে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাইকে ফাঁসাতে নিজের সন্তানকে হত্যা করেছেন এক বাবা। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নিজের মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী নাঈমা আক্তারকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন বাবা ফরিদ মিয়া।

সোমবার (১৬ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টায় বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলী চৌধুরী এবং বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

পুলিশ জানায়, শনিবার (১৪ জুলাই) হবিগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট শাহিনুর আক্তারের আদালতে জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডের কথা শিকার করে ঘাতক ফরিদ। এর আগে শুক্রবার (১৩ জুলাই) ফরিদকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোয়াইয়া গ্রামের ফরিদ মিয়া (৪০) ও তার অপন বড় ভাই শুকুর মিয়ার (৫২) মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ছিল। শুকুর মিয়ার ৬ ছেলে এবং লোকবলের দিক থেকে শক্তিশালী হওয়ায় ফরিদ মিয়া তার সঙ্গে কোনোভাবেই পেরে উঠছিলেন না। একসময় শুকুর মিয়া লোকদের হাতে আক্রমণের শিকার হন ফরিদ।

ফরিদের স্ত্রী গত চার বছর আগে মারা যান। এরপর দুই মেয়ে এবং এক ছেলেকে নিয়ে কোনো রকমে সংসার চলছিল তার। একধিকে সংসারের দ্বায়িত্ব, অপরদিকে বড় ভাইয়ের নির্যাতন। এসব কারণে বড় ভাই শুকুরকে ফাঁসানের ফন্দি আটে ফরিদ।

বড় ভাইকে ফাঁসাতে পাশের বাড়ির সম্রাজ মিয়ার ছেলে সাজন মিয়াকে (২০) নিয়ে নিজের মেয়েকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ফরিদ। গত ৯ আগস্ট দুপুরে মেয়ে নাইমা স্কুল ফিরে থালা-বাসন ধুতে পুকুরঘাটে যায়। পরে সাজন ও ঘাতক পিতা পুরানো একটি মশারি নিয়ে পুকুর ঘাটেই শিশু নাইমার মুখ চেপে ধরে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে পুকুরের কিনারায় ঝুপের নিচে চেপে ধরা হয় শিশু নাইমাকে। পরে তারা সেইখানেই নাইমার মরদেহ লুকিয়ে রাখা হয়।

এ ঘটনা সাজানোর পর তার ভাইয়ের পরিবারের ৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন ফরিদ। মামলার দীর্ঘ ১০ মাস তদন্ত শেষে এই লোমহর্ষক ঘটনা বেড়িয়ে আসে।

বাহুবল মডেল থানার ওসি মো. মাসুক আলী আরো জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সাজন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চলছে।
 
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় পুকুর থেকে নাঈমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত