সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:২৩

জামালগঞ্জে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত: হত্যা-ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় দক্ষিণ কামলাবাজ, কাজীরগাঁও এবং কালীপুরে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মো. নূর হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের দল দিনভর কাজ করেছে ওই এলাকায়। এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে তদন্তকারী দল।

মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে পাকিস্তানি হায়েনা ও তাদের সহযোগী স্থানীয় বাঙালি দালালরা সুনামগঞ্জ জেলায় যে কয়েকটি বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করেছিল, এর মধ্যে জামালগঞ্জের গ্রামগুলোর হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট উল্লেখযোগ্য ছিল।

তদন্ত দল কাজীরগাঁওয়ের সাফিজ উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের নিয়ে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে। গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জব্বার মিয়ার ছেলেসহ সাতটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তদন্ত দলের সদস্যরা। এরপর কালীপুরে গিয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নাগর আলীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তারা। মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীসহ যাদের বাড়িঘর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল, তাদের সঙ্গেও কথা বলে তদন্ত দল। শেষে কাজীরগাঁওয়ে শহীদ ছয় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসহ গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি নূর হোসেন জানান, জামালগঞ্জে প্রথম তদন্ত কাজ শুরু করেছেন তারা। প্রাথমিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই এলাকায় হত্যা, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং ধর্ষণের মতো লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আরও তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

গত বছরের ১২ এপ্রিল উপজেলার সদরকান্দির শহীদ মুক্তিযোদ্ধা গণি মুন্সির ছেলে আব্দুল জলিল বাদী হয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামসুল আলম ঝুনু মিয়া, লক্ষ্মীপুর গ্রামের মজনু মিয়া ও এনাম উদ্দিনসহ ১৫ থেকে ২০ জনকে বিবাদী করে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি এই তিনটি গ্রামে সংঘটিত অপরাধের জন্য আসামিদের দায়ী করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত