গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৬:২১

গোয়াইনঘাটে ভুয়া নাগরিক সনদে নিয়োগপ্রাপ্তদের অপসারণ দাবি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদ

সিলেটের গোয়াইনঘাটের ভুয়া নাগরিক সনদ নিয়ে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়া বহিরাগতদের চাকরীচ্যুত করার দাবিতে ফুসে ওঠেছেন এলাকার ছাত্র, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) ভুয়া নাগরিক সনদে নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষকদের বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে গোয়াইনঘাটের সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে তারা অনতিবিলম্বে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেয়া ভুয়া নাগরিক সনদ নিয়ে নিয়োগ পাওয়া এসব সহকারী শিক্ষকদের চাকরি থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। অন্যথায় অচিরেই কঠোর আন্দোলনসহ লাগাতার কর্মসূচির হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষে দেয়া স্মারকলিপি গ্রহণ করেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা শফিকুর রহমান।

স্মারকলিপি প্রদানকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আশরাফুল আলম পান্না, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আছাদ, সাইদুর রহমান, মতিউর রহমান, রুবেল আহমদ, নাজিম উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন, আ. রব, নাজমিন আক্তার, সাফিয়া বেগম, তুলি মনি, হাসিনা আক্তার প্রমুখ।

এদিকে এ ঘটনায় একই দিন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন সিলেট জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি। সংগঠনের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদান করেন জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি সোহেল আহমদ।

সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) গোয়াইনঘাট সমিতি সিলেটও অনুরুপ একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিতি ছিলেন সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আহমেদ মোস্তাকিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মোজাম্মেল আলী, সহসাধারণ সম্পাদক জয়নুল হক, দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট মোবারক হোসেন প্রমুখ।

এ ব্যাপারে কথা হলে গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আহমেদ মোস্তাকিন সদস্য গোলাম কিবরিয়া রাসেল জানান, আমাদের উপজেলার নাগরিক নয়, অথচ তারা ভুয়া সনদে চাকরি নিয়ে আমাদের কোটাকে কলুষিত করছে। দেখি সাহস থাকলে তারা গোয়াইনঘাটে প্রবেশ করুক। ঢের হয়েছে আর নয় ,এদের রুখে দাঁড়ানোর পালা। এদেরকে বহিষ্কারসহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের তরফ থেকে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এসব বাটপারদের প্রতিরোধে যে কোন আন্দোলনে সবার আগে থাকবো।

উল্লেখ্য, সদ্য সমাপ্ত নিয়োগে গোয়াইনঘাট থেকে ৩৩ জন পদায়িত হন বিভিন্ন বিদ্যালয়য়ে। তার মধ্যে গোয়াইনগ্রামের ঠিকানা দিয়ে গোয়াইনঘাট আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পান গোয়াইগ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে রাজমিন নাহার, রোল নং-৫৩১৮২৩। কিন্তু তিনি ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের কোন বাসিন্দাই নয় বলে প্রত্যায়ন করেছেন ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম হোসেন মুকুল ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম।

এছাড়াও ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের চৈলাখেল ৮ম খন্ড গ্রামের বাসিন্দা পরিচয়ে আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমান, রোল নং-৫৩২৪৬৮৯ নামের আরেক (ভুয়া নাগরিক) শিক্ষক লুনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়িত হয়েছেন।

৩নং পূর্ব জাফলংয়ে ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জিলানী আহমদ জানান, এই নামের কোন লোক আমার ওয়ার্ডে নেই। সে টাউট ও ভুয়া নাগরিক। তার বা তার বাবার নামে এক ইঞ্চি জমিও আমার ওয়ার্ডে নেই। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সে এখানকার ভোটার হয়েছে। আমি তার গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত