সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলাকে হাতিয়ার বানিয়ে আওয়ামী 'ফ্যাসিবাদী' সরকার তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসাকে চরিতার্থ করেছে। অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের জড়িয়ে ফরমায়েশি সাজা প্রদানের রায় জাতি প্রত্যাখ্যান করেছে।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন সাজা প্রদানের প্রতিবাদে সিলেট জেলা ও মহানগর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

তারা আরও বলেন, দেশের জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে পুরো অবগত আছে। আদালতকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের মাধ্যমে বাকশালী সরকার গোটা বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের ভয়াল রোষানল থেকে তাদের অনুগত প্রধান বিচারপতিও রেহাই পান নি। এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করা বোকামির শামিল। অবিলম্বে এই ফরমায়েশি রায় বাতিল করতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট জেলা সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের সভাপতিত্বে ও মহানগর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত চৌধুরী সাদেকের পরিচালনায় নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্টারি মাঠে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আলহাজ্ব এম.এ হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি আলহাজ্ব শফি আহমদ চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, মহানগর সহসভাপতি এডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব, ফরহাদ চৌধুরী শামীম, জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা সহসভাপতি একেএম তারেক কালাম, শাহজামাল নুরুল হুদা, মহানগর সহসভাপতি অধ্যাপক সামিয়া বেগম চৌধুরী, জেলা সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, মহানগর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম সিদ্দিকী, এডভোকেট আতিকুর রহমান সাবু, হুমায়ুন আহমদ মাসুক, জেলা যুগ্ম সাধারণ সৈয়দ সাফেক মাহবুব, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, আব্দুল আহাদ খান জামাল, আবুল কাশেম, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ রেজাউল করিম আলো, জেলা দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট মো. ফখরুল হক, জেলা মহিলা দলের সভাপতি জাহানারা ইয়াসমিন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, মহানগর সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ, জেলা হকার্স দলের সাধারণ সম্পাদক খোকন ইসলাম। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মহানগর বিএনপির আপ্যায়ন সম্পাদক আফজাল উদ্দিন।

সভাপতির বক্তব্যে আবুল কাহের চৌধুরী শামীম বলেন, অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার ফরমায়েশি রায়ে তার নগ্ন বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছে। জাতি বাকশালী সরকারের এই ফরমায়েশি রায় ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আলহাজ্ব এম.এ হক বলেন, আওয়ামী লীগের বাকশালী শাসনে দেশের প্রতিটি রাষ্ট্রযন্ত্র আজ বাকশালীরুপে জাতির নিকট আবির্ভূত হয়েছে। বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করতে প্রথমে বেগম খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হলো, এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়ে রাজনীতির ময়দান থেকে দূরে রাখার নীলনকশা করা হলো। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবে না। খালেদা জিয়াকে নিয়েই বিএনপি নির্বাচনে যাবে এবং সময়ের ব্যবধানে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে তারেক রহমান বীরের বেশে বাংলাদেশে আসবেন।
 
সিলেট বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, দেশের আদালতগুলোতে এখন সরকারের কাছ থেকে প্রেরিত রায় পাঠ করে শোনানোর প্রতিযোগিতা চলছে। কেউ ন্যায় বিচার করলে সেই বিচারককে শুধু চেয়ার নয়, এমনকি দেশও ছাড়তে হচ্ছে। নিজেদের লোকদের বিচার প্রক্রিয়ায় জড়িত করে ইচ্ছেমাফিক তদন্ত এবং রায় প্রদান করা হচ্ছে। এই সরকারের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করে কোন লাভ নেই। গণবিস্ফোরণে এই সরকারকে বিদায় করে জনতার সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই মানুষ ন্যায়বিচার পাবে।