মুজাহিদুল ইসলাম সর্দার, দিরাই

০৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৫:৫৭

উদ্বোধনের পাঁচ বছর পরও শুরু হয়নি কার্যক্রম

দিরাই জগদল হাসপাতাল

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল হাসপাতাল। ২০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালের ভবন নির্মাণসহ আনুষাঙ্গিক সকল কার্যক্রম শেষ হয় ২০১৩ সালে। সে সময় অনেকটা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হাসপাতালটির উদ্বোধনও করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের ৫ বছর পার হলেও এখনো তালাবন্ধ এ হাসপাতাল। অযত্ন আর অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসা উপকরণ। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেও কেবল জনবল সঙ্কটের কারণে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।

দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে জদল বাজার সংলগ্ন স্থানে হাওর পাড়ের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ২০০৬ সালে শুরু হয় এ হাসপাতালের নির্মাণ কাজ। স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষে হয় ২০১৩ সালে। সে সময় প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন। কিন্তু জনবলের অভাবে দীর্ঘ সময়েও চিকিৎসা কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি।

অত্যাধুনিক এ হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, অফিস সহকারী ও ল্যাব অ্যাটেনডেন্টসহ ১৩টি পদ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় ৪০টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে এ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ৫ বছর পার হলেও এখনো চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় হাসপাতাল ভবনটিই এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান গেট ও স্টোর রুমসহ ৫টি ভবনের সব কক্ষেই তালা ঝুলছে।  ভবন থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। মরিচা ধরেছে লোহার গ্রিলে। ভেঙে পড়েছে জানালার কাচ। ভবনের চারপাশে জমেছে ময়লা-আবর্জনা। নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান আসবাব ও যন্ত্রপাতি। এমনকি এখন পর্যন্ত পানি সরবরাহেরও কোনো ব্যবস্থা হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, আমাদের এলাকায় যাতায়াতের ব্যবস্থা বর্ষায় নাও হেমন্তে পাও। তাদের অনেকেরই চিকিৎসার জন্য দূরে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। যে কারণে তাদেরকে স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। অথচ এ হাসপাতালটি চালু হলে চিকিৎসা সংকটের সমাধান হতো।

দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। সে কারণে এর কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন আশুতোষ দাস বলেন, জনবলের অভাবে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। জনবলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বার বার যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত