শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

২২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:২৬

বিনা নোটিশে শ্রীমঙ্গলে চা বাগানের কর্মচারীকে চাকুরীচ্যুত, শ্রমিক অসন্তোষ

শ্রীমঙ্গলের সাতঁগাও চা বাগানের এক কর্মচারীকে চাকুরীচ্যুতির ঘটনায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কোন কারণ দর্শানো নোটিশ না দিয়েই বাগান কর্তৃপক্ষ ওই বাগানের কারণিক সুরঞ্জিত দাশকে অন্যায় ভাবে চাকুরীচ্যুত করে বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। শ্রম অধিদপ্তরও ওই কর্মচারীকে পুণরায় কাজে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাগান কর্তৃপক্ষকে।

এ ব্যাপারে সুরঞ্জিত জানান, ‘ঘটনার পুর্বের দিন চাপ দিয়ে ১২ ঘন্টা কাজ করার পর হঠাৎ করে চাকুরীচ্যুতির চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হয়, যা আমি গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করি। আমি এ ঘটনা সাথে সাথেই বাংলাদেশ টি এষ্টেট স্টাফ এসোসিয়েশন নেতাদের অবগত করি। বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক স্বাক্ষর নিতে চাপ প্রয়োগ করলে বাদানুবাদ সৃষ্টি হয়, এক পর্যায়ে এ ঘটনা পুরো বাগানে ছড়িয়ে পড়ে খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের বা কাজে গাফিলতির কোন অভিযোগ নেই মুলত ট্রেড ইউনিয়নের সাথে জড়িত থেকে শ্রমিক ও কর্মচারীদের ন্যায্যতা আদায়ে কথা বলার কারনে ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সাথে সম্পৃক্ততা থাকায় কর্তৃপক্ষ নাখোশ ছিলো এবং বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে চাপ প্রদান করা হতো। মুলত এ কারনে শ্রম আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে চাকুরীচ্যুত করার চেষ্টা করা হয়। যা ত্রিপক্ষীয় আপস-মীমাংসায় চাকুরী পুর্নবহালের মাধ্যমে সমাধান হয়েছে এবং কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন করা হয়েছে।’

সাঁতগাও চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘উদ্ভুত ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ মিলে বৈঠকে বসে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে সমাধান করা হয়েছে। এ ব্যাপারে এখন আর কোন সমস্যা নেই।’

বাংলাদেশ টি এষ্টেট স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া জানান, ‘মুলত ট্রেড ইউনিয়ন করার কারনে মালিকপক্ষ এ কর্মচারীর উপর ক্ষিপ্ত ছিলো, তাকে বিভিন্ন সময় এসব বিষয়ে শাসানো হতো এবং চাকুরীচ্যুতির ভয় দেখানো হতো বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়া তিনি জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এবং ছাত্রজীবনেও শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সহ. সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্টানের সাথে সংযুক্ত। শ্রম আইনের ২৫(ক) ধারার অপ-প্রয়োগের মাধ্যমে তাকে সরানোর চেষ্টা করা হয়, যা আমরা সবাই মিলে বসে প্রত্যাহার করিয়েছি।

শ্রম অধিদপ্তর শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের পরিচালক মো. নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মালিক পক্ষ টারমিনেশন (চাকুরীচ্যুত) করেছিলেন, টারমিনেশনকে অবৈধ বলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী সেটি গ্রহণ না করলে এবং এ ব্যাপারে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে আমি অভিযোগ পেয়ে ত্রিপক্ষীয় সভার মাধ্যমে উভয়পক্ষকে শুনে বাগান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত টারমিনেশনের সিদ্ধান্তকে মীমাংসাকারী হিসেবে আইন ও বিধিসম্মত মনে না হওয়াতেই, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে পুনরায় চাকুরীতে পুনবহালের সিদ্ধান্ত প্রদান করি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত