কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

২২ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯ ২০:৫২

কমলগঞ্জে বরযাত্রীবাহী গাড়ি আটকে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, আহত ১৩

স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোনসহ ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

মৌলভীবাজারেরর কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর-পীরেরবাজার সড়কে ময়না বুড়ির ঘর সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে বরযাত্রীবাহী ১০টি গাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। চারটি গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর ও হামলা চালিয়ে ১৩ জনকে আহত করেছে ডাকাতরা। ডাকাতরা দু’দফায় নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে।

কুলাউড়া উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের মানগাঁও গ্রামের বরযাত্রী গাড়ির বহর কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের উবাহাটা গ্রামে একটি হিন্দু বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে করে ফেরার পথে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টায় এ ঘটনাটি ঘটে।  

আক্রান্ত বরযাত্রী ও উদ্ধারে যাওয়া স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তায় একটি প্রাইভেট কার এলোপাতাড়িভাবে ফেলে অতর্কিতভাবে ২০ থেকে ২৫ জনের ডাকাতদল ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। বিয়ের বরযাত্রীবাহী চারটি গাড়ি ভাঙচুর করে ডাকাতরা নারী পুরুষদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোনসহ প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নেয়।

বরযাত্রী সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার সুরৎ পাল জানান, সিলেট রিজার্ভ পুলিশের সদস্য অলক পাল, শমশেরনগরে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যসহ ডাকাতদের হামলায় বরযাত্রীদের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে বরযাত্রীদের উদ্ধারে গেলে ডাকাতদল তাদের উপর হামলা চালিয়ে দ্বিতীয় দফা ইউপি সদস্যসহ ৩ জনকে আহত করে। আহতরা রাতেই বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডিসপেন্সারীতে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

শমশেরনগর ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান চৌধুরী ও ব্যবসায়ী আনোয়ার খান বলেন, খবর পেয়ে পিকআপসহ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যাবার কিছু দুরে পুলিশ থেমে যায়। এ সময় একটু এগিয়ে গেলেই ডাকাতদল হামলা চালিয়ে তাদের কাছে রক্ষিত নগদ ৮ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন লুটে নেয়। তাছাড়া প্রাইভেট কারও ভাংচুর করে। ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ও সাবেক ইউপি সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে।  ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান, ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ও আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, পুলিশ না বললে তারা সামনের দিকে এগিয়ে যেতেন না।

বিষয়টি জানাজানি হলে রাতে শতাধিক বিক্ষোব্দ লোক শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এসে জড়ো হন। ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান রাত সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।

শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ ডাকাত আক্রান্ত লোকদের দেখতে যান ও তাদের খোঁজ খবর নেন। শমশেরনগর ফাঁড়ির এস.আই. শাহ আলম বলেন, মোবাইল ট্র্যাকিং করে ডাকাতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি।

কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান জানান, খুব গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের ধরার ও লুন্ঠিত মোবাইল ফোনগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে টহলে ছিল। আর পুলিশ ফাঁড়িতে যে কয়েকজন সদস্য ছিল তারাই সেখানে গিয়েছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত