নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯ ২১:২৪

শাহপরান হাসপাতাল: উদ্বোধনের তিন বছর পরও চালু হয়নি চিকিৎসা কার্যক্রম

তিন তলা বিশিষ্ট সুরম্য ভবন। আছে চিকিৎসা সরঞ্জামাদি। তবু চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। তিন বছর ধরে এই অবস্থা সিলেটের খাদিমে নির্মিত শাহপরান (র.) হাসপাতালের। ০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  সিলেট সদর উপজেলার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন পরও বেশিরবাগ সময়ই তালবদ্ধ থাকে সুরম্য এই ভবনটি। এখনও শুরু হয়নি সেবা কার্যক্রম।

সংশ্লিস্টরা জানিয়েছেন, লোকবল নিয়োগ না হওয়া ও অর্থনৈতিক অনুমোদন না থাকায় এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি করা যায় না। ফলে আন্তঃবিভাগের কার্যক্রম চালু করা যায়নি। ক্ষুদ্র পরিসরে বর্হিবিভাগের কার্যক্রম চালু রয়েছে।

সিলেট  এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপর চাপ কমানো এবং সিলেট সদর উপজেলাবাসীর চিকিৎসা নিশ্চিতে এই হাসপাতাল নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছিলো সরকার। তবে উদ্বোধনের দীর্ঘদিন পরও চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় কোনো উপকারেই আসছে না এই হাসপাতালটি।

এ ব্যাপারে সিলেটের সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল রায় বলেন, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে হাসপাতালটি নির্মিত হয়েছিলো। রাজনীতিবিদরা যখন প্রতিশ্রুতি দেন তখন কেবল ভবন নির্মানের চিন্তা করেন। কিন্তু হাসপাতালের জন্য যে অর্থছাড় ও লোকবলের অনুমোদন করাতে হয় তা তারা চিন্তা করেন না। ফলে অবকাঠামো নির্মিত হলেও বাকী প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন না হওয়ায় হাসপাতাল দুটি চালু করা যাচ্ছে না।

জানা যায়, প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেটের খাদিমে শাহপরান (র.) হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরও শাহপরান হাসপাতালের বিশাল ভবনটি পড়ে আছে প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায়।

গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই হামসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকে তালা দেওয়া। হাসপাতালের ভেতরে কেউ নেই। নেই একজন নিরাপত্তারক্ষীও।

জানা যায়, সম্প্রতি এই হাসপাতালের জনবলের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়। অনুমোদনের পর ৩১ শয্যার হাসপাতালের জন্য ৯জন চিকিৎসকসহ ৩৭টি কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও প্রদান করা হয়েছে। তবে এখনও অর্থনৈতিক অনুমোদন পাওয়া যায়নি।

শাহপরান (র.) হাসপাতাল চালু না হওয়ায় উপজেলাবাসী দূর্ভোগ পোহাচ্ছে জানিয়ে সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ বলেন, ওসমানী হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে সবসময়ই তিন চারগুণ বেশি রোগী থাকেন। ফলে কাঙ্খিত সেবা পান না রোগীরা। এছাড়া সদর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মূমূর্ষ রোগীদের ওসমানী হাসপাতালে অনেক সময় নিয়ে যাওয়াও সম্ভব হয় না। তাই সদর উপজেলার খাদিমে এই হাসপাতালটি সরকার নির্মাণ করেছে।
 
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও এই হাসপাতালের জন্য জনবল অনুমোদন করেছে। তাই আশা করছি শীঘ্রই এটি চালু করা সম্ভব হবে।

তবে সিভিল সার্জন বলেন, জনবল অনুমোদন হলেও আর্থিক অনুমোদ মেলেনি। তাই হাসপাতালটি চালু হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। আরও অন্তত বছর দুয়েক সময় লাগতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত