দিরাই প্রতিনিধি

১৩ মার্চ, ২০১৯ ১৪:৫৬

দিরাইয়ে স্কুলছাত্রী মুন্নী হত্যা: একজনের ফাঁসির রায়

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে স্কুলছাত্রী হুমায়ারা আক্তার মুন্নী হত্যাকারী বখাটে মোহাম্মদ এহিয়া সরদার ইয়াহিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৩ মার্চ) বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার এই রায় ঘোষণা করেন।

জানা যায়, দণ্ডপ্রাপ্ত এহিয়া দিরাই পৌর শহরের আনোয়ারপুরের নয়া হাটির মাদানী মহল্লা এলাকার ইতালি প্রবাসী হিফজুর রহমানের মেয়ে মুন্নীকে উত্যক্ত করতো। ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দিরাই পৌর শহরের মাদানী মহল্লা এলাকায় খুন করার উদ্দেশ্যে মুন্নীর ঘরে ঢুকে আসামি এহিয়া সরদার ও আসামি তানভির। আসামি তানভির দরজার নিকট দাঁড়িয়ে থাকে। এহিয়া ধারালো চাকু দিয়ে মুন্নীকে তার কক্ষে পড়াশুনা করা অবস্থায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে।

মেয়ের চিৎকার শুনে মা রাহেলা বেগম এগিয়ে আসলে আসামি এহিয়া তাকে (রাহেলা বেগম) ধাক্কা মেরে কক্ষের মেঝেতে ফেলে দেয়। পরে এহিয়া সরদার, তানভির এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জন মোটরসাইকেলে ওঠে দ্রুত পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত মুন্নীকে প্রথমে দিরাই হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ডাক্তাররা তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেবার পরামর্শ দেন। সিলেটে নিয়ে যাবার সময় পথে পাথারিয়া বাজার এলাকায় মৃত্যু ঘটে মুন্নীর।

ওইদিনই মুন্নীর মা রাহেলা বেগম এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে উপজেলার সাকিতপুর গ্রামের জামাল মিয়া সরদার ও মোছাম্মৎ হামিদা বেগমের ছেলে মোহাম্মদ এহিয়া সরদারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দায়ের করেন।

অন্য আসামি উপজেলার তাড়ল গ্রামের আবুল কালাম চৌধুরীর ছেলে মো. তানভির আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা না পাওয়ায় তাকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি দানের প্রার্থনা করা হয়।

আদালত গত বছরের ২২ জানুয়ারি অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আসামি মোহাম্মদ এহিয়া সরদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন এবং তানভির আহমদ চৌধুরীকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বুধবার সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার আসামি এহিয়া সরদারকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডে দন্ডিত করেন।

আদেশে বলা হয়, আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ হাইকোর্ট ডিভিশন কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হলো।

মামলা পরিচালনায় বাদীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন- অ্যাডভোকেট রবিউল লেইছ, আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট হুমায়ুন মঞ্জুর চৌধুরী এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পিপি ড. মো. খায়রুল কবির রুমেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত