নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ মার্চ, ২০১৯ ১৫:১৮

মুঠোফোনে ‘অপরিচিত মেয়ের’ সাথে কথা বলার জেরে বন্ধুকে হত্যা

ওসমানীনগরে কিশোর হত্যার রহস্য উদঘাটন

সিলেটের ওসমানীনগরে বন্ধুদের হাতে মোস্তাফিজুর রহমান (১৫) নামে এক কিশোর খুনের ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। মুঠোফোনে অপরিচিত এক মেয়ের সাথে কথা বলাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার (১৬ মার্চ) সিলেট জেলা বিশেষ শাখা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মিডিয়া অফিসার মো. মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক মোস্তাফিজুরের এক বন্ধু জীবন (১৬) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, মোস্তাফিজুর তার বন্ধু। লিমন ও শরীফসহ তারা চার বন্ধু একসাথে চলাফেরা করতো। প্রায় একমাস আগে এক অপরিচিত নম্বর থেকে তার মোবাইলে এক মেয়ের কল আসে। তখন থেকেই লিমন, শরীফ ও জীবন ওই মেয়েটির সাথে নিয়মিত কথা বলতো।

''কথা বলার ১০-১২ দিন পর এ ঘটনা মোস্তাফিজুর জানতে পেরে সেও একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ওই মেয়েটির সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা তিনজনই চায়নি মোস্তাফজুর মেয়েটির সাথে কথা বলুক। কার মোস্তাফিজুর ছিল সহজ-সরল প্রকৃতির। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।''

জীবন জানায়, এ ঘটনার জেরে ২০-২২ দিন আগে মান্দারুকা স্কুলের পাশে সন্ধ্যার পরে তিন বন্ধু মিলে মোস্তাফিজুরকে মারধোর করে। ১৩ মার্চ আবার তাদের মধ্যে ওই মেয়ের সাথে মুঠোফোনে কথা বলা নিয়ে ঝগড়া হলে মোস্তাফিজুরকে মারধোর করে তারা।

''এরপর মোস্তাফিজ তাদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলে অপরিচিত নম্বরে মেয়ের সাথে কথা বিষয়টি জীবনের বড় ভাইকে বলে দিবে বলে হুমকি দেয়।''

পরের দিন ১৪ মার্চ বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ি থেকে মোস্তাফিজুরকে ডেকে নিয়ে যায় জীবন, লিমন ও শরীফ। কিছুক্ষণ এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করে রাত ৮টা ১০ মিনিটের দিকে মান্দারুকা স্কুলের মাঠে নিয়ে মোস্তাফিজুরকে গলায় চাপ দিয়ে ধরে তারা, যাতে চিৎকার করতে না পারে। তিনজনই তখন তাকে পাথর দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জখম করতে থাকে। এরপর একটি রশি দিয়ে মোস্তাফিজুরের গলায় লাগিয়ে টান দিতে থাকে, যতক্ষণ না তারা নিশ্চিত হয় মোস্তাফিজুরের মৃত্যু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৫ মার্চ) এ ঘটনায় মোস্তাফিজুরের মা মোছা. রাসনা বেগম (৪৫) বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০৯, তারিখ-১৫/০৩/২০১৯খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪।

১৫ মার্চ সকালে পুলিশ স্কুল মাঠ থেকে মোস্তাফিজুরের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওইদিনই তার বন্ধু একই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে জীবনকে আটক করে পুলিশ।

নিহত মোস্তাফিজুর ওসমানীনগর উপজেলার নিজ মান্দারুকা গ্রামের আবদুল মোসাব্বিরের ছেলে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত