জৈন্তাপুর প্রতিনিধি

১৭ মার্চ, ২০১৯ ০১:১০

প্রচারণা শেষেও ভোটে আগ্রহ নেই জৈন্তাপুরের ভোটারদের

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

এখানে নির্বাচন মানেই ছিলো উৎসব। সোমবার (১৮ মার্চ) জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করার কথা ছিলো উপজেলাজুড়ে। অথচ একদিন আগেও এ নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের তেমন আগ্রহই নেই।

দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা বা আমেজ নেই। প্রার্থীরাও ভোট চাইতে গিয়ে তেমন সাড়া পাচ্ছেন না। ফলে ভোটারদের উপস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।

শনিবার প্রচারণার শেষদিনেও উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। তবে এ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। প্রার্থীদেরও একই অভিমত। ভোটাদের দ্বারে দ্বারে গেলেও ভোটাদের কাছ থেকে তেমন সাড়া না পেয়েও তারা হতাশ। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা জোরেশোরে প্রচার প্রচারণায় নেমে পড়েছিলেন। পোস্টারে ছেয়ে যায় পুরো জৈন্তাপুর। তবুও এবার নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় নেই আগের মত জৌলুস।

সচেতন মহল মনে করছে, দলীয় প্রতীকের ব্যবহার আর বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচন অনেকটাই নিরুত্তাপ।

এ ছাড়া গত সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে ভোটাররা ভোট দিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তাই ভোটাররা অনেকটাই নীরব ভূমিকায় রয়েছেন। এবারে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মাঝে নেই কোন আলোচনা।

বেশ কিছু ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে ভোটাররা ভোট দানের উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন।

আগে ভোটাররা ভোটের হিসাব-নিকাশ করতেন। এবার উল্টো হয়েছে। এবার প্রার্থী কষছেন ভোটের হিসাব। জৈন্তাপুর উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৬ হাজার ৬২২ জন ভোটারকে নিয়ে প্রার্থীদের যত চুলছেড়া বিশ্লেষণ। ভোটারের এই হিসাবের খাতায় আসছে ৫৪ হাজার ৪৯৩ পুরুষ, ৫২ হাজার ১২৯ জন মহিলা। তাদের পবিত্র আমানত ভোটেই নির্বাচিত হবেন ১ জন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এ উপজেলায় ৪৫ টি কেন্দ্রের ২৬৯ টি কক্ষে ভোট দেবেন।প্রতিটি কেন্দ্রে ১ জন করে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ২৬৯ ও পোলিং অফিসার ৫৩৮ জন নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে ভোটাদের নির্বাচনে আগ্রহ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রার্থীরাও। কি পরিমান ভোটার ভোট কেন্দ্রে যাবেন এ নিয়েও শঙ্কায় তাঁরা। ফলে আগের নির্বাচনগুলোর মতো এই নির্বাচনে প্রচার প্রচারণার জমজমাট ভাবও লক্ষ্য করা যায়নি।

উপজেলার চিকনাগুল বাজার এলাকার ভোটার ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনে প্রার্থীদের নড়াচড়া থাকলেও এলাকায় ভোটের কোনো হাওয়া নাই। কয়েকটা পোস্টার ঝুলানো আছে দেখছি। তবে নির্বাচন কবে জানি না।

ভোটার নাসির উদ্দিন জানান, আমার ভোট কি আমি দিতে পারব, না অন্য কেউ আমার ভোট দিয়ে দেবেন? জনগন যাতে তার নিজের ভোট নিজে দিতে পারে সরকারের কাছে এই দাবি জানাই।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমদ বাবর বলেন, নৌকা প্রতীক নিয়ে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নৌকার প্রার্থী লিয়াকত আলী। তিনি আরো বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে বেড়াচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সহ সকল নেতাকর্মীরা নৌকার প্রার্থী লিয়াকত আলী পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত ইনশা আল্লাহ।

উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আহমদ বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে আসা উপজেলা ছাত্রলীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল আহমদ তৃণমূলের নেতাকর্মী নিয়ে (ঘোড়া) প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও তৃণমূলের নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে কাজ করছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল আহমদ সমর্থনে ঘোড়া প্রতীকে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে অবশ্যই কামাল আহমদ ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করবেন। তিনি বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে টিকানা দিগন্ত, বাহুর ভাগ সহ কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে অনিয়ম হতে পারে।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে আছেন ৩ জন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী (নৌকা), উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল আহমদ (ঘোড়া), ইসলামী ঐক্যজোট থেকে আব্দুল মতিন (মিনার)।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত