জুলহান চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ

২৬ মার্চ, ২০১৯ ১৯:২৫

ফেঞ্চুগঞ্জে ডাক্তার ও জনবল সংকটে ব্যাহত চিকিৎসা সেবা

উপজেলায় এখনো চালু হয়নি ৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছেন না উপজেলাবাসী। ওই এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্য থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তবে শয্যা উন্নীত করলেও বাড়েনি চিকিৎসক ও অন্যার শাখার জনবল। তাই সেবার মান কিছুটা বাড়লেও জনবল সংকটের কারণে উপজেলাবাসী পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বাসিন্ধারা। 

উপজেলার কর্মদা গ্রামের রাসেল বলেন, ‘চিকিৎসক সংকট কারণে দীর্ঘদিন যাবত এই উপজেলার বাসিন্ধার তাদের প্রাপ্য সেবা পাচ্ছেন না। হাসপাতালে উন্নত যন্ত্রাংশের সংকট ও কনসালটেন্টে অভাব আছে। এই জন্য একটু জটিল কিছু হলেই সিলেটে পাঠিয়ে দেয়া হয়।’

রাজনগর গ্রামের নোমান বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসের অবস্থা খুব খারাপ। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারছে না স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্টরা। এই দুরাবস্থা  থেকে উওরণসহ স্বাস্থ্য সেবায় উন্নয়ন চান আমরা উপজেলাবাসী।’ 

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় সোয়া লাখের মতো। এই উপজেলার পাশ্ববর্তী তিন উপজেলার বেশির ভাগ রোগি এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জন্য রয়েছে মাত্র একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের। কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা দিন রাত সেবা দিয়ে ও রোগীদের মন যোগাতে পারছেন না বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বর্তমানে যে ডাক্তার রয়েছেন তা দিয়ে আগের ৩১ শয্যা হাসপাতাল চালানোর ধারণ ক্ষমতা আছে। বহিঃবিভাগে গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। এছাড়া আন্তঃবিভাগে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ জন রোগী প্রায়ই ভর্তি থাকেন। পাশাপাশি জরুরি বিভাগে সব সময় রোগীর চাপ থাকে। এছাড়াও কর্মী সংকটতো রয়েছেই।  এই কর্মী সংকটের কারণে হাসপাতালের পরিস্কার পরিছন্নতা ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কেন ৫০শয্যা চালু হচ্ছে  না তা বলতে পারব না। তবে এই মুহুর্তে আমার স্টাফ বেশি জরুরি এবং তার চেয়ে বেশি জরুরি ক্লিনার।’

তিনি আর বলেন, ‘প্রয়োজনীয় স্টাফ থাকলে একজন ডাক্তার অনেক সেবা দিতে পারে। স্টাফ সংকট সমস্যার সমাধানের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।’

এ ব্যাপারে সিলেট সিভিল সার্জন ডা: হিমাংশু রায় বলেন, ‘ফেঞ্চুগঞ্জ সহ আরো  কয়েকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কে ৫০শয্যায় ঊন্নীত করা হয়েছে। কনসালটেন্ট, ডাক্তার, ও স্টাফ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে।’ এইসব নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরো কমপক্ষে ছয় মাস লেগে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত