হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

১৪ এপ্রিল, ২০১৯ ১৪:৩১

‘জীবনের জন্য নদী’ প্রতিপাদ্যে হবিগঞ্জে ব্যতিক্রমী বর্ষবরণ

'নববর্ষ বাজে নতুন দিনের গান, নদী বয়ে যাক অবিরত বাংলাদেশের প্রাণ' এই স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখা এবং খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার প্রতিবছরের মতো এবারও ব্যতিক্রমভাবে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করেছে। পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরে স্থানীয় শিরিষতলায় মিলন ঘটে হবিগঞ্জের পরিবেশ ও সংস্কৃতিকর্মীদের।

রোববার (১৪ এপ্রিল) নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ে সকলের মধ্যে বেজে উঠে একই সুর, একই দাবি। তা হলো নদীমাতৃক বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে বাঁচাতে হবে নদী।

‘জীবনের জন্য নদী’ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে নববর্ষকে উদযাপন হবিগঞ্জে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তিন প্রজন্মের কাছে হবিগঞ্জের নদীগুলোকে পরিচিত করা হয়।

আয়োজকরা বলেন, আমাদের পরিচিত অনেক নদী ইতিমধ্যে হারিয়ে গেছে, কিছু নদীর অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। বিজাতীয় সংস্কৃতি যেমন আমাদের জন্য হুমকি, তেমনি কিছু প্রভাবশালী ও হীনমন্য মানুষের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতির প্রাণ নদীগুলোও আজ অস্তিত্বের সংকটে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, নদী হচ্ছে একটি জাতির সভ্যতা ও অস্তিত্বের অংশ। নদী না বাঁচলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। নদী যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে মানুষ বাঁচবে কী করে? আমাদের নদীগুলো যে হারে শুকিয়ে যাচ্ছে, দখল ও দূষণের শিকার হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ মরুভূমির দেশে পরিণত হওয়ার আশংকা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

নদী দূষণ নিয়ে তিনি বলেন, জেলার মাধবপুর এবং হবিগঞ্জ সদরে কলকারখানার অপরিকল্পিত বর্জ্য নিষ্কাশনের কারণে লাখ মানুষের জীবনযাত্রা দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে। মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন সুতাং নদীর পাড়ের মানুষ। কয়েক বছর ধরে চলে আসা এ শিল্পবর্জ্য দূষণের কারণে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি মারা যাচ্ছে। মৎস্যশূন্য হয়ে পড়েছে খাল-বিল। অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন চর্মরোগে। মানুষ অসহনীয় দুর্গন্ধের ভেতর দিনাতিপাত করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রভাবশালীদের ভোগ বিলাস ও বাণিজ্যের জন্য সুতাং নদীসহ খালগুলোকে বেছে নিচ্ছে। এভাবে নদীর মৃত্যু হোক তা আমরা আশা করি না, এটা অবশ্যই প্রতিরোধ করতে হবে। দেশ, মাটি, প্রকৃতির প্রতি আমাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। তাই এই দায়িত্ব সকলকে পালন করা উচিত।

তিনি বলেন, নদী রক্ষায় জনগণকে আরো সোচ্চার হতে হবে, দখলদারদের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে হবে। তাই খোয়াই, সুতাংসহ সকল নদী রক্ষায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া জরুরী।

কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে উপস্থিত ছিলেন, বাপা হবিগঞ্জের সভাপতি অধ্যাপক মো. ইকরামুল ওয়াদুদ, সহসভাপতি তাহমিনা বেগম গিনি, বাপা আজীবন সদস্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল, বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক জাহান আরা খাতুন, অধ্যাপক ইলিয়াস বখত চৌধুরী, সৈয়দ কামরুল ইসলাম, এডভোকেট বিজন বিহারী দাস, সৈয়দা তাহমুদা শানু, সৈয়দ বাকি মো. ইকবাল, ইমতিয়াজ তুহিন, সিদ্দিকী হারুন, আসমা খানম হ্যাপি, এডভোকেট শায়লা আক্তার, মো. রাকিব হোসেন প্রমুখ।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত