ছাতক প্রতিনিধি

২৫ এপ্রিল, ২০১৯ ২১:৩৬

ছাতকে সরকারি গাছ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি

ছাতক উপজেলা মসজিদ উন্নয়নের নামে উপজেলা পরিষদের ৫টি বড় আকারের গাছ নাম মাত্র মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। মসজিদ বাউন্ডারির ভেতরে ছোট আকারের আরো ৪টি গাছ বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে। গাছ বিক্রির ঘটনায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে খোদ উপজেলা পরিষদেও। এনিয়ে উপজেলা জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। অপ্রয়োজনীয় কারণে গাছ বিক্রির ফলে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর এলাকার সবুজ পরিবেশও বিনষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ অনেকেরই।

জানা গেছে, ছাতক উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদকে উপজেলা মডেল মসজিদ হিসেবে রূপান্তর করতে সরকারি বরাদ্ধে নতুন মসজিদ নির্মাণের টেন্ডার হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক কার্যক্রম হিসেবে পরিষদের পুকুর পাড় ও আশপাশে বিভিন্ন প্রজাতির ৫ টি গাছ বিক্রির জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদা আফসারীকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ঠ এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি), বিট-ফরেষ্ট কর্মকর্তা, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, ইফা’র পরিচালক রয়েছেন। 

এদিকে কোন প্রকার প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই গোপনে গত ১৩ এপ্রিল কমিটির মাধ্যমে নিলাম দেখিয়ে বড় আকারের ৩টি রেইন্ট্রি গাছ ও ২টি মেহগনি গাছ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যে একটি সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করা হয়। ওইদিন বিকেলেই সিন্ডিকেটের লোকজন ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকায় ৫টি গাছ এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে বলেও জানা যায়। গাছ বিক্রি কমিটির একজন সদস্য উপজেলার সাথে সম্পৃক্ত আরো ২ জনকে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় গাছ ব্যবসায়ীদের মতে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা মূল্যের গাছ মাত্র ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। কাজল দাস, আফরোজ মিয়াসহ কয়েকজন কাঠ ব্যবসায়ী জানান, রেইন্ট্রি প্রতি ঘনফুট কাঠের বাজার মূল্য ১ হাজার থেকে ১২ শ টাকা ও মেহগনি কাঠের মূল্য ১৫ শ থেকে ২ হাজার টাকা।

এদিকে প্রকাশ না করার স্বর্তে উপজেলা প্রসাশনের এক কর্মকর্তা জানান, গাছ বিক্রিতে অনিয়ম করে প্রসাশনের এক কর্মকর্তা, বহিরাগত ২ জনকে নিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন।

ছাতক পৌর সভার কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সুমেন জানান, সরকারি ৫টি গাছ বিক্রিতে অনিয়ম হয়েছে। উচ্চ মূল্যের পুরাতন এ গাছগুলো স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উপজেলা পরিষদ মসজিদ।

এ ব্যাপারে উপজেলা বিট-ফরেষ্ট কর্মকর্তা এমদাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি।

ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান জানান, গাছ বিক্রি ও নিলামের ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই। গাছ বিক্রিতে সিন্ডিকেট হয়েছে এবং অতি অল্পমূল্যে গাছগুলো বিক্রি হয়েছে শুনেছি। উপজেলা পরিষদের সমন্বয় কমিটির আগামী সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গাছ বিক্রয় কমিটির আহবায়ক আবেদা আফসারী জানান, এ ব্যাপারে কোন সিন্ডিকেট হয়ে থাকলে তার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে এর ব্যবস্থা নেয়া হবে। গাছ নিলামের বিষয় শুক্রবার মসজিদের মাইকে জানানো হয়েছে। পর দিন সর্বোচ্চ নিলামদাতার কাছে গাছ বিক্রি করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত