কুলাউড়া প্রতিনিধি

১২ মে, ২০১৯ ২২:৩১

থামছে না শামীমের মায়ের আহাজারি

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি

ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নিহতদের একজন মৌলভীবাজারের আহসান হাবীব শামীম (১৯)। তিনি কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের বাদে ভুকশিমইল গ্রামের মৃত হাফিজ আবদুল খালিকের ছেলে এবং সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের ছোট ভাই।

শামীমের মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় পৌছার সাথে সাথে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার নিজ গ্রামের বাড়িতে। কান্নার রোল পড়েছে পরিবারের সদস্যদের মাঝে। কান্নার ভারী হয়ে উঠেছে ভুকশিমইলের আকাশ বাতাস। স্বপ্নের ইউরোপ যাত্রার এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। আদরের ছোট ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা মা রাজনা বেগম।

শামীম এ বছর দাখিল পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। সে হাফিজিয়া মাদ্রাসা থেকে কোরানের হাফেজ হয়ে ভর্তি হন ইবতেদায়ী মাদ্রাসায়। কিন্তু ইউরোপের রঙ্গিন স্বপ্ন তাকে ও তার পরিবারকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। পড়ালেখা গুটিয়ে পাড়ি জমান লিবিয়ায়। সেখান থেকে পাড়ি দিতে চান ইতালিতে। কিন্তু মাঝপথে সাগরে নৌকা ডুবে লাশ হলেন তিনি। সিলেট গোটাটিকর সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার দাখিলের ছাত্র ছিলেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহেদ আহমদ বলেন, গতকাল রাত পর্যন্ত আমি তাদের বাড়িতে ছিলাম। যেটুকু জেনেছি, বাবা মারা যাওয়ার পর বড় আশা নিয়ে শামীমের মা তাকে ইউরোপ পাঠিয়েছিলেন। তার আরেক ভাই ইউরোপে থাকেন মূলত তারই পরামর্শে তাকে লিবিয়ায় পাঠানো হয়।

নিহত শামীমের বড়ভাই আবু সাইদ জানান, গত রমজানে সে স্থানীয় মসজিদের তারাবি পড়াতে আসে৷ সেসময় তাকে ইউরোপে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই প্রক্রিয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে দালালের মাধ্যমে তাকে ও বড় ভাই সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের শ্যালকের সাথে লিবিয়া পাঠানো হয়। সেখান থেকে তারা ৩ দিন আগে ইতালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন আরেক দালালের মাধ্যমে। তারপর আমরা জানলাম সে তিউনিসিয়ায় নৌকা ডুবিতে নিহত হয়েছে। তার সাথে যারা ছিলেন তারাও নিহত হয়েছেন।

তিনি আরো জানান, সাত ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামীম সবার ছোট। স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে সে হাফিজিয়া পাশ করে সিলেট গোটাটিকর সরকারি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সেখান থেকে এবারের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত