কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

১৬ মে, ২০১৯ ১৯:২৩

ভেস্তে যাচ্ছে মাধবপুর লেক উন্নয়ন প্রকল্প

এনটিসি’র আপত্তি, প্রকল্পের টাকা ফেরত যাওয়ার শঙ্কা

মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী উপজেলা কমলগঞ্জের অন্যতম পর্যটন আকর্ষনীয় স্থান মাধবপুর লেক। পট্রাকৃতিক এই লেকে দিনদিন বাড়ছে পর্যটকদের আনোগোনা।

তবে পর্যটক বাড়লেও পর্যটকদের সেবা প্রদান ও লেকের উন্নয়নে এতোদিন তেমন উদ্যোগ উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত বছর মাধবপুর লেকের উন্নয়নের একটি প্রকল্পে পর্যটন কর্পোরেশন সাড়ে ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্ধ দিলেও ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি)-এর আপত্তিতে আটকে আছে উন্নয়ন কাজ। ফলে প্রকল্পের টাকা ফেরৎ যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিস্টরা।

কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মাধবপুর লেকে আসা পর্যটকবহনকারীদের যানবাহন প্রবেশকালে এনটিসি'র মালিকানাধীন মাধবপুর চা বাগান কর্তৃপক্ষ একটি টোকেনের মাধ্যমে টাকা আদায় করে। তবে  চা বাগানের চার দিকের উঁচু টিলার মধ্যবর্তী  প্রায় ১ বর্গ কিলোমিটার আঁকাবাকা এই লেকে পর্যটকদের সেবাদানে তেমন কোনো ব্যবস্থাই নেই।

পর্যটকদের কাছে লেকটি আরো আকৃষ্ট করতে ও তাদের সেবা ও নিরাপত্তাদানে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আবেদনে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন মাধবপুর লেক উন্নয়নে সাড়ে ৪৬ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহন করে। এই প্রকল্পের কাজ শুরুর উদ্যোগ নিলে বাধা দেয় মাধবপুর চা বাগান।

এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এনটিসি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে সংশ্লিস্টরা জানান লেক সংস্কারে এনটিসি বোর্ড কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এতে আটকে আছে লেক উন্নয়নের কাজ।

এ ব্যাপারে মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু জানান, এনটিসি সরকারি প্রতিষ্ঠান আর পর্যটন কর্পোরেশনও সরকারি প্রতিষ্ঠান। আর সরকারি জমি বন্দোবস্ত নিয়ে চা বাগান করা হয়েছে। এখানে মাধবপুর লেকের পর্যটন উন্নয়নে একটি প্রকল্প গ্রহন করা হলেও কিভাবে এনটিসি আপত্তি জানায়? তিনি মনে করেন জেলা প্রশাসক চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মাধবপুর লেকের উন্নয়নের কাজ করতে পারেন।

মাধবপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক মুরাদ চৌধুরী এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।

তবে ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি)-এর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লৈক এলাকাটি চা বাগানভুক্ত বলে এনটিসির বোর্ডের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। স্থানীয়ভাবে মাধবপুর লেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে তাদের আপত্তি রয়েছে।

এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, এনটিসি আপত্তি প্রত্যাহার না করলে পর্যটন কর্পোরেশনের বরাদ্ধকৃত সাড়ে ৪৬ লাখ টাকা ফিরে যাবে।

তিনি বলেন, লেকটিকে জেলা প্রশাসনভুক্ত করতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে নতুন করে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

ইউএনও বলেন, কেবল লেক নয়, চা বাগানের জমিও সরকারের। এনটিসি তা বন্দোবস্ত নিয়ে চা উৎপাদন করেছে মাত্র।

তিনি আরও বলেন, চা বাগান কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের যানবাহন থেকে টোকেনের মাধ্যমে যে আয় করছে তার বৈধতা নিয়েও খতিয়ে দেখা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত