নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ মে, ২০১৯ ১১:৪৪

ইফতার খাইয়া যাইন, টেকা না থাকলে পরে দিয়া যাইবা

ইফতারের বাকি মাত্র কয়েক মিনিট, রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে হাক ছেড়ে এক দোকানি ডাকছেন, ‘ও ভাই ইফতার খাইয়া যাইন, টেকা না থাকলে পরে দিয়া যাইবা’

সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার শহীদ মিনারের সামনে চায়ের দোকানদার ইমদাদুল হক টিপু। রমজান মাস শুরুর পর থেকে চায়ের পাশাপাশি ফুটপাতে ইফতার বিক্রি করেন। ৩০ টাকা মূল্যের প্রতি থালা ইফতারীতে থাকে, ভোনা খিচুড়ি (মাংস ছাড়া তেহারী), ছোলা ভোনা, একটি পেয়াজু, একটি বেগুনী ও শাঁকের বড়া। সাথে থাকে ঠান্ডা এক গ্লাস শরবত। ইফতারের সময় হলেই নিম্ন, নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষজন ভিড় জমান তার ভ্রাম্যমান দোকানে। তার দোকানে ইফতার করতে বেশির ভাগই থাকেন পথচারী, সিএনজি অটোরিক্সা ও রিকশা চালকসহ দিনমুজুর। এছাড়াও এই এলাকার ফুটপাতের হকাররাই তার মূল ক্রেতা।



ইফতার কিনে রিকশায় বা সিএনজিতে বসেই খাওয়া সেরে নেন চালকরা। আর দোকানের পাশে পথচারীরা ফুটপাতে বসেই ইফতার করেন।

রিকশা চালক সমুজ আলী বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। বাসায় গিয়ে ইফতার করার সময় হয় না। হোটেলে উফতার করতেও অনেক টাকা লাগে। তাই এখানেই কম টাকায় ইফতার করি।

আরেক রিকশা চালক আতর আলী। তিনি বলেন, কম টাকায় পেট ভরে খাওয়া যায়। খাবারও অনেক মজা। ৩০ টাকায় যা খাওয়ানো হয় ভালো হোটেলে গেলে এর দাম ১০০ হয়ে যাবে।

সিএনজি চালক সিকান্দর আলী বলেন, প্রায় প্রতিদিনই এখানে আমি ইফতার করতে। কারণ একটাই কম টাকায় ভালো খাবার পাওয়া যায়। বর্তমান ইফতারের সময় কোনো হোটেলেও বাকি খাওয়ানো হয় না। কিন্তু টিপু ভাই অনেক পরিচিত অপরিচিত মানুষজন বাকিও খাওয়ান।



দোকানের মালিক ইমদাদুল হক টিপু বলেন, প্রায় সময়ই দেখি অনেক পথচারির পকেটে টাকা না থাকলে শুধু পানি খেয়ে ইফতার করেন। তাই আমি সবাইকে ইফতার খাওয়ার জন্য ডাকি, টাকা না থাকলে পরে দেবার কথা বলি। পরে কে টাকা দিবে বা না দিবে সে চিন্তা করি না। কারণ এই রোজা মাসে রোজদারকে এক গ্লাস পানি খাওয়ালেও সোয়াব হয়। তাই আমি আমার সাধ্যমত সবাইকে খাওয়ানোর চেষ্টা করি। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ প্লেইট ইফতার বিক্রি হয় আমার। এরকম অনেক  মানুষ আছেন যারা ইফতার খেয়ে যান এবয় পরে এসে টাকা দিয়ে যান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত