৩১ মে, ২০১৯ ১৬:৫৫
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বুল্লা গ্রামের রহিমা বেগম তার ছেলের বউকে নিয়ে এসেছেন প্রসূতি সেবা নেওয়ার জন্য। সকাল ১০টা থেকে তারাসহ আরও কয়েকজন নারী বুল্লা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সামনে বসে রয়েছেন। কেউই ভিতরে প্রবেশ করতে পারছেন না কারণ ওই সেবা কেন্দ্রটি তালাবদ্ধ। বেলা ১২টা পর্যন্ত তারা বসে থাকেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দরজার সামনে। এর ভিতর আরও ১২ থেকে ১৩ জন নারী চিকিৎসা সেবা নিতে এসে ফিরে যান।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বুল্লা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় এ দৃশ্য। এ চিত্র নতুন নয়। প্রায় প্রতিদিনই তালাবদ্ধ থাকে বুল্লা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। এমনকি খোলা থাকলেও এই কেন্দ্রে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর।
বুল্লা ইউনিয়নের বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, লোকবল সঙ্কটের কথা বলে অধিকাংশ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি তালাবদ্ধ থাকে। প্রতিদিন প্রায় ৩০ জন রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে যান। যার মধ্যে বেশিরভাগই থাকেন গর্ভবতী। এই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে অনিতা বণিক নামে একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা রয়েছেন। তার বিরুদ্ধেও সময়মত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে না আসার অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে জনবল সংকটের কথা। মাধবপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জন্য এমবিবিএস ডাক্তার, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, আয়া, নৈশ প্রহরী সহ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা সহ ৫টি পদ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে শুধুমাত্র পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা কর্মরত আছেন এখানে। বাকি পদগুলো খালি আছে।
চিকিৎসা নিতে আসা আছিয়া বেগম নামে এক নারী জানান, সকাল ১০টা থেকে ১২ থেকে ১৩জন নারী চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে এসেছে। কিন্তু এখনো স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা হাসপাতালে আসেননি। প্রায়ই তালাবদ্ধ থাকে হাসপাতাল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জহরলাল সাহাজী জানান, এ হাসপাতালের অবস্থা খুবই খারাপ। অবহেলিত বুল্লাবাসী ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় জনবলের কারণে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। প্রায় সময়ই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি বন্ধ থাকে।
মাধবপুর পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল জানান, এখানে ৫টি পদ রয়েছে। কিন্তু এখন কেবল স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা রয়েছেন। জনবল সংকটে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। জনবল পূরণের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
আপনার মন্তব্য